কারো মধ্যে মৃত্যুর আলামত দেখা গেলে অর্থাৎ সে যে কোনো সময় মারা যেতে পারে এ রকম ধারণা হলে উত্তম হলো তাকে ডান কাতে কেবলামুখী করে শোয়ানো অথবা চিত করে (পা কেবলার দিকে ছড়িয়ে) কেবলামুখী করে শুইয়ে মাথার নিচে উঁচু কিছু দিয়ে সিনা কিবলামুখী করে দেওয়া। তবে অসুস্থ অবস্থায় নাড়া চাড়া করলে রোগীর কষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকলে তাকে তার অবস্থায়ই ছেড়ে দেওয়া উচিত। মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কেবলামুখী করে শোয়ানো উত্তম, জরুরি বা অপরিহার্য কিছু নয়।
Advertisement
মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে কলেমার তালকিন করা অর্থাৎ তাকে কালিমা পড়তে উৎসাহিত করা মুস্তাহাব। যেন মৃত্যুর আগে তার শেষ কথা হয় কালিমা। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কালেমার তালকিন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আপনাদের মরণাপন্ন ব্যক্তিদের ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই) বলার তালকিন করুন। (সহিহ মুসলিম: ৯১৬)
মুআজ ইবন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে শুনেছি, যার শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫২৯, সুনানে আবু দাউদ: ৩১১৬)
কালেমার তালকিন করার পদ্ধতি হলো, তার পাশে বসে এমনভাবে কলেমা পড়তে থাকা, যাতে সে শুনতে পায়। তাকে কলেমা পড়তে বলার প্রয়োজন নেই।
Advertisement
মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে সুরা ইয়াসিন তিলাওয়াত করাও মুস্তাহাব। নবিজির (সা.) একটি হাদিসে মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে সুরা ইয়াসিন পাঠ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মা’কিল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আপনারা আপনাদের মৃতদের জন্য সুরা ইয়াসিন পাঠ করুন। (সুনানে আবু দাউদ: ৩১২১)
সাহাবি ও তাবেঈদের মধ্যে মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে সুরা ইয়াসিন পাঠের প্রচলন ছিল। সাফওয়ান (রহ.) কয়েকজন তাবেঈ থেকে বর্ণনা করেন যে তারা সাহাবি গুজাইফ ইবনে হারেসের (রা.) মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। তখন তিনি বললেন, আপনাদের মধ্যে কেউ কি সুরা ইয়াসিন পাঠ করতে পারেন? তখন সালেহ ইবনে শুরাইহ (রহ.) সুরা ইয়াসিন পড়তে শুরু করেন। চল্লিশ আয়াত পর্যন্ত পড়া হতেই গুজাইফের (রা.) মৃত্যু হয়। সাফওয়ান (রহ.) বলেন, তাবেঈরা বলতেন, মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশের বসে সুরা ইয়াসিন পাঠ করলে তার মৃত্যু যন্ত্রণা লাঘব হয়। (মুসনাদে আহমদ: ৪/১০৫)
ওএফএফ/জেআইএম
Advertisement