আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করে সমালোচনার মুখে পড়েন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মুকিব মিয়া। তাকে ধরতে অভিযানেও নামে পুলিশ। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। পরে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কর্মকর্তার বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
Advertisement
এদিকে মুকিব মিয়াকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত’ থাকার অভিযোগে শেকৃবির দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তারা হলেন- শেকৃবির কৃষি অর্থনীতি বিভাগের উপ-রেজিস্ট্রার গোলাম সারোয়ার ও অ্যাগ্রি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ডিন কার্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমান।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিমের সই করা পৃথক চিঠিতে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
Advertisement
বরখাস্ত দুই উপ-রেজিস্ট্রার গোলাম সারোয়ার ও ইলিয়াসুর রহমান
চিঠিতে বলা হয়, চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণ অর্থাৎ শেকৃবির জন্য প্রযোজ্য চাকরি বিধি-সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ২(খ) উপবিধিতে বর্ণিত ‘অসদাচরণ’-এর দায়ে বিধিমালার ১২(১) উপবিধি মোতাবেক তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। এ আদেশ আজ থেকে কার্যকর হবে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লিফলেট বিতরণ করেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মুকিব মিয়া। নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে সেই ছবি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ শেয়ারও করেন তিনি।
তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা মুকিব।
Advertisement
মুকিব মিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে টানা ১০ বছর তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআইএ) কর্মরত ছিলেন। সে সময়ও তিনি নিয়মিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। তাছাড়া শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান জানান, মুকিব মিয়া গত তিন মাসের বেশি সময়ের মধ্যে একদিনও কলেজে আসেননি। তিনি অনলাইনে যোগদানের আবেদন করেছিলেন। তা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তিনি যোগদানের হার্ডকপি জমা দেননি। সম্প্রতি তিনি তিন মাসের অসুস্থতাজনিত ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন। তার সঙ্গে চিকিৎসকের সুপারিশ, ব্যবস্থাপত্র, অসুস্থতার প্রমাণপত্র কিছুই দেননি। এরপর আর যোগাযোগ রাখেনি।
এএএইচ/এমআইএইচএস