কৃষি ও প্রকৃতি

সবুজ মাঠে হলুদ হাসি

মামুনূর রহমান হৃদয়

Advertisement

ক্যালেন্ডারের পাতায় এখন পৌষ মাস। শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো মাঠজুড়ে কেবল চোখে পড়ছে সরিষা ফুলের সমারোহ। ঝলমলে রোদে চকচকে সরিষা ফুলের দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। প্রজাপতির দল ছুটে বেড়াচ্ছে ফুলে ফুলে। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত সরিষার বিস্তৃত মাঠ।

চোখ জুড়ানো হলুদের মেলা প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়েছে নিখুঁত ভাবে। মাঠের পর মাঠ যেন শুধু সর্ষে ফুলের হলুদ হাসিতে রাঙিয়ে দিয়েছে পুরো গ্রাম।

চাঁদপুরের কচুয়ায় সরিষার হলুদ ফুলে সজ্জিত বিস্তীর্ণ ভূমি। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ রঙের মেলা। ক্ষেতের পর ক্ষেতে সরিষা ফুলের এমনই নয়নাভিরাম দৃশ্য। দেখলেই জুড়িয়ে যায় নয়ন। মন বলে সেই হলুদের মাঝে মিশে যেতে। সরিষার ক্ষেতে নিজের স্মৃতি ধারণ করতে দলবেঁধে ছুটে আসছেন স্কুলের শিক্ষার্থী, তরুণ, শিশু এমনকি নানা পেশার মানুষ।

Advertisement

বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তুলছেন মোবাইল ও ক্যামেরায়। আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সরিষার হলুদ ফুলের অগণিত মাঠ।

দূর থেকে ভেসে আসছে সরিষা ফুলের মিষ্টি গন্ধ। মধু সংগ্রহে ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছির দল। তাদের গুনগুন সুরে বিমোহিত চারদিক। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্যে কৃষকের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।

প্রতিটি সরিষার দানায় দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। হলুদের মাঠে কৃষকের ছোট ছোট অপূর্ণ শখ খেলা করছে এখন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষকের পরিবারে এখন লাভের হাতছানি।

সচরাচর ঢালু জমিতে সরিষার আবাদ হয়ে থাকে। কার্তিক মাসে বর্ষার পানি নামার পর পর জমির আগাছা পরিষ্কার করে হালচাষ ছাড়াই নরম জমিতে সরিষা বপন করা হয়। শীত কুয়াশায় সরিষার ফলন ভালো হয়। রোপণের ৮০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই পাকা সরিষা ঘরে তোলা সম্ভব।

Advertisement

সবজি খাওয়ার পাশাপাশি মসলা হিসেবেও ব্যবহৃত হয় সরিষা। তবে শীতকালীন ফসল সরিষা প্রধানত ব্যবহার হয় ভোজ্যতেল হিসেবে। গবাদি পশুর খাদ্য ও জমির সার হিসেবে সরিষার খৈল ব্যবহার করা হয়। বহুবিধ ব্যবহারযোগ্য এই শস্য সরিষার আবাদে খরচ নামমাত্র।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলনও হয় বাম্পার, হাটে মেলে ভালো দাম। তাই প্রতি বছরই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সরিষার চাষ। পাশাপাশি বাড়ছে সরিষা ক্ষেতে পর্যটকদের ভিড়।

লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী।

এসইউ/জেআইএম