কক্সবাজার থেকে হেঁটে হেঁটে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণ করবেন বাংলাদেশের তরুণ অভিযাত্রী ইকরামুল হাসান শাকিল। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্র সৈকত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই যাত্রা শুরু করবেন তিনি।
Advertisement
এ অভিযানের ৯০ দিনে পায়ে হেঁটে শাকিল পাড়ি দেবেন প্রায় এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও দুর্গম পথ। বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে নেপালের ওপর দিয়ে এভারেস্টে পৌঁছে তিনি আরোহণ করবেন ২৯ হাজার ৩১ ফুট শৃঙ্গে।
এ অভিযানে তাকে সমর্থন জোগাচ্ছে বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব। অভিযানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক বা টাইটেল স্পনসর হিসেবে আছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ। স্ন্যাক্স পার্টনার হিসেবে আছে মিস্টার নুডলস। গিয়ার পার্টনার হিসেবে আছে মাকালু-ই-ট্রেডার্স নেপাল। হেলথ পার্টনার হিসেবে আছে সিস্টেমা বাংলাদেশ এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় বেশ কিছু মানুষ।
মঙ্গলবার যাত্রা শুরুর আগে ইকরামুল হক শাকিল উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কক্সবাজারের ইনানী সি বিচ থেকে এভারেস্টের উদ্দেশে রওনা হচ্ছি। আমার এই অভিযান ৯০ দিনের। ১৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় উঠব।’
Advertisement
শাকিল বলেন, ‘প্রাণ তরুণদের এবং তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করছে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন স্পোর্টসের ক্ষেত্রে, বিভিন্ন সেক্টরে। আমি চাই ভবিষ্যতেও তারা যেন আমাদের মতো তরুণদেরকে, স্বপ্নবাজদেরকে সহযোগিতা করে এবং উৎসাহ দেয়।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলারসহ আরও অনেকে।
যাত্রা শুরুর আগে শাকিল জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং পরিবেশ রক্ষায় টেকসই সমাধান-বিষয়ক প্রচারণার জন্য জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ইয়ুথ অ্যাডভোকেট হিসেবে এ অভিযানে যাচ্ছেন তিনি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা-পদান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করবেন তিনি।
শাকিল বলেন, এই অভিযানের মাধ্যমে তিনি পরিবেশ সংরক্ষণ, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং টেকসই উপায়ে এ লক্ষ্য অর্জনের গুরুত্ব তুলে ধরবেন। কক্সবাজার থেকে এভারেস্ট বেজক্যাম্প পর্যন্ত এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দেওয়ার পর তিনি এভারেস্টের চূড়ায় উঠবেন। তার লক্ষ্য, দীর্ঘ ও দুর্গম অভিযানও পরিবেশের ক্ষতি না করে সম্পন্ন করা সম্ভব তা প্রমাণ করা।
Advertisement
এর আগে নেপালের এক হাজার ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল’ সফলভাবে পাড়ি দেওয়া প্রথম বাংলাদেশির স্বীকৃতি অর্জন করেছেন শাকিল। নতুন এ অভিযানের পথে তিনি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করবেন। এর মধ্যদিয়ে কীভাবে প্রকৃতির দূষণ, পর্যটন এবং পাহাড়ি সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করছে সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করবে।
একজন যুব-পরামর্শক হিসেবে শাকিলের এই যাত্রা প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই এবং পরিবেশবান্ধব সমাধান প্রচারের প্রতিশ্রুতিকে আরও দৃঢ় করবে, যা পরিবেশ ও মানুষের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন বয়ে আনবে। অভিযানটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে তার সামনে রয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের হাতছানিও।
আরএমডি/এমএস