ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মূল হোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে নেত্রকোনা এবং ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়৷
Advertisement
গ্রেফতাররা হলেন, মূলহোতা ডাকাত দলের সর্দার মো. আলমগীর (৩৪) ও তার ভাই রাজীব হোসেন (২১)। এসময় তাদের কাছ থেকে ১০টি মোবাইল ফোন, ৪ হাজার ২১০ টাকা, ২টি ছোরা, ২টি রুপার আংটি, এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ডসহ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, রিমান্ডকৃত শহিদুল ইসলামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। মূলহোতা আলমীরকে নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আলমগীরের তথ্যের ভিত্তিতে তার ভাই রাজীবকে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়৷
Advertisement
আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের মূলহোতা আলমগীর৷ দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিলেন তিনি৷ প্রাথমিকভাবে বাস ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন আলমগীর৷
তিনি আরও বলেন, লুণ্ঠনের সময় শ্লীলতাহানি হয়েছে এখন পর্যন্ত এমন তথ্য পেয়েছি৷ তবে প্রাথমিকভাবে বাস ডাকাতির সময় ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের চেষ্টার কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি৷
মূলহোতা আলমগীরকে ৭ দিনের রিমান্ড এবং তার ভাই রাজীবকে ৫ দিনের রিমান্ডে চাওয়া হবে৷ এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সাভারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ ডাকাতে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার সবুজ ও শরীফুজ্জামানের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন করিম। অপরদিকে গ্রেফতার শহিদুল ইসলামের পাঁচ দিনের রিমান্ড চলছে।
Advertisement
এদিকে এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে গত শুক্রবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার (এএসআই) আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এছাড়া শুক্রবার ভোরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় নাটোরের বাসিন্দা ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৮-৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, ১৭ ফেব্রুয়ারি দিনগত মধ্যরাতে ইউনিক রোড রয়েলসের বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানি করার পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নির্জন স্থানে বাস থামিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। ডাকাতরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে চালক বাস নিয়ে পুনরায় যাত্রা শুরু করেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার পর যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান। এসময় ডাকাতিতে জড়িত সন্দেহে বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) ও হেলপার মাহবুব আলমকে (২৮) আটক করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে নাটোর আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। বুধবার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।
এফএ/এমএস