আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় একমত নন মাক্রোঁ

ইউক্রেন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক বিষয়েই একমত নন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে দুই নেতার মধ্যে মতভেদ আরও প্রকটভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

Advertisement

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে আলোচনায় বসেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। পরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মাক্রোঁ বলেন, আমরা যুদ্ধ বন্ধ করতে দ্রুত চুক্তি চাই। তবে সেই চুক্তি ভঙ্গুর হলে চলবে না। আর শান্তি মানে এই নয় যে, ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

মাক্রোঁ বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করা ভালো। কিন্তু পুতিনের দাবি মেনে ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতাই প্রকট হবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মতে, ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি ছাড়া যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব নয়।

ট্রাম্প এই নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিশ্চয়তা নিয়ে একটা কথাও বলেননি। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। কিন্তু মাক্রোঁ বলেন, আমরাও চাই যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ হোক। কিন্তু আমরা এমন চুক্তি চাই না, যা দুর্বল।

Advertisement

তবে দুই নেতা একটা বিষয়ে একমত, তা হলো, যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার পর ইউক্রেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শান্তিরক্ষী বাহিনী থাকবে। মাক্রোঁ বলেছেন, শান্তিরক্ষীরা সীমান্তে থাকবে না। তারা শুধু ইউক্রেনে শান্তি বজার রাখায় ভূমিকা রাখবে।

ইউক্রেন ইইউয়ের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, আমি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, এটা নিয়ে তার কোনো সমস্যা নেই।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এখন আলোচনা শুরু হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে কি আর নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসাবে ভাবা ঠিক হবে? ট্রাম্প যেভাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন ও তিনি যেভাবে বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন মাত্রা আসতে যাচ্ছে।

ট্রাম্পের দাবি খারিজ মাক্রোঁর

Advertisement

ইউক্রেনকে সাহায্য করা নিয়ে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন মাক্রোঁ। ট্রাম্পের দাবি ছিল, ইউরোপ ইউক্রেনকে ঋণ দিয়েছে। তারা পরে অর্থ ফেরত পেয়ে যাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বোকার মতো ইউক্রেনকে শুধু অর্থ ও সামরিক সাহায্য করে গেছে।

সেই সময় মাক্রোঁ বলেন, এই তথ্য ঠিক নয়। আমরাও ইউক্রেনকে অর্থ দিয়েছি। আমরা ইউক্রেনকে যে অর্থ দিয়েছি, তার ৬০ শতাংশ হলো তাদের সাহায্য করতে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইইউ-ও ইউক্রেনকে ঋণ, গ্যারান্টি ও অনুদান দিয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস

নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের পেশ করা একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দ্রুতই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। প্রস্তাবটিতে রাশিয়াকে আগ্রাসনকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি।

১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ১০ জন সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ পাঁচটি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। রাশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলো এই প্রস্তাবে কিছু সংশোধনী এনেছিল। তবে তা খারিজ হয়ে যায়।

তিন বছর আগে ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’ শরু করে রাশিয়া। যুদ্ধের তৃতীয় বার্ষিকী পালনে কিয়েভে গিয়েছেন কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা।

সূদ্র: ডয়চে ভেলে

এসএএইচ