জাতীয় সংসদের অধিবেশন থেকে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না দিলে শাহবাগের রাস্তা না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।
Advertisement
আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বলেছেন, ‘আমরা চাই এ মুহূর্তে চলা সংসদের অধিবেশনে সরকার বিষয়টি সমাধানের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দেবে। নতুবা অবরোধ চলবে।’
কোটাবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় মাস্টার্স করে এক বছর ধরে চাকরির জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছি। কোনোভাবেই হচ্ছে না। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেসময়কার বাস্তবতা বিবেচনায় ৫৬ শতাংশ কোটা রেখেছিলেন। তবে এখন আর এতো কোটার প্রয়োজন নেই। সরকার এটাকে বহাল রেখে মেধাবীদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করছে। আমাদের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না দেয়া হলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
রোববার বেলা ৩ টা ৫ মিনিট থেকে শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ করে রেখেছে আন্দোলনকারীরা। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বিলুপ্ত না করে যৌক্তিক সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন তারা।
Advertisement
দাবিগুলো হলো- কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ থেকে ১০ ভাগে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্যপদে মেধাতালিকা থেকে নিয়োগ দেয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণ করা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা।
পূর্বঘোষিত রোববারের পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ করেন তারা। এতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় অচল হয়ে পড়েছে শাহবাগ। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে শাহবাগ।
দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিলে মিছিলে পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নেন তারা। মিছিল থেকে স্লোগান দেয়া হয়- ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই,’ ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মেনে নাও,’ ‘কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই,’ ‘১০% এর বেশি কোটা নয়।’
কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন চলছে। ওই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৪ মার্চ পাঁচদফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিতে সচিবালয় অভিমুখে যেতে চাইলে পুলিশি ধরপাকড় ও আটকের শিকার হন তিন আন্দোলনকারী। এরপর আরও বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা।
Advertisement
এদিকে শাহবাগ এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। শাহবাগ পুলিশ বক্সের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ লাঠিসোটা, টিয়ারসেল নিয়ে অবস্থান করছে। শাহবাগ থানার সামনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে একটি সাঁজোয়া যান (এপিসি)।
শাহবাগ থানা থেকে সাঁজোয়া যান বের করা হলে সাঁজোয়া যানের সামনে শুয়ে পড়েন অান্দোলনকারীরা। সাঁজোয়া যানের সামনে বুক পেতে দেন তারা। পরে পুলিশ সাঁজোয়া যান পেছনে নিতে বাধ্য হয়।
এমএইচ/এআর/এমইউএইচ/জেডএ/আরআইপি