নির্বাচন কমিশনের ধারাবাহিক সংলাপ শেষ হলো। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গত তিন মাস ধরে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। এরই ধারবাহিকতায় ৪০টি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসি। এ ছাড়াও সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ও নারী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি। এসব সংলাপের মধ্য দিয়ে ইসি যেসব প্রস্তাব পেয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সকল অন্তরায় দূর করে কমিশনকে সকলের আস্থাভাজন হয়ে উঠতে হবে।
Advertisement
সংলাপের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের কাছ থেকে যেসব প্রস্তাব পেয়েছে কমিশন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- সব দল ও প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা, সকলের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা করা, নির্বাচনের সময় সকল গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোকে কমিশনের অধীনস্ত করা, নির্বাচনের আগে ও পরে সন্ত্রাস দমনের ব্যবস্থা করা, একই মঞ্চে নির্বাচনের প্রচারণার ব্যবস্থা করা, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করা, নিবন্ধিত দলগুলোর পরামর্শ নিয়ে একটি জাতীয় ফোরাম করা, সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইভিএম ব্যবহার করা, সীমানা নির্ধারণ করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়া, না ভোটের বিধান চালু করা, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া, সকল আইন বাংলায় করা এবং সংরক্ষিত নারী আসন বৃদ্ধি করা।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের পর নির্বাচন কমিশনের গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশনের ব্যাপক দায়িত্ব। আমাদের দেশে রাজনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা। এজন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়াটা নির্বাচন কমিশনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এটা তাদের সাংবিধানিক দায়িত্বও। এই দায়িত্বে সামান্যতম কোনো অবহেলা বা বিচ্যুতির সুযোগ নেই। আগামী জাতীয় নির্বাচন কে এম নুরুল হুদা কমিশনের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। কাজেই কমিশনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে হবে। সবার জন্য সমতল ক্ষেত্র সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে কমিশন বিশ্বাসযোগ্যতার পথে এগিয়ে যেতে পারে। সংলাপের মাধ্যমে কমিশন যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছে সে অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন কিন্তু কমিশনের একক চেষ্টায় হবে না। এতে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
এইচআর/আইআই
Advertisement