মতামত

জঙ্গিদের নতুন কৌশল, প্রয়োজন সামাজিক প্রতিরোধ

জঙ্গিবাদের ভয়াবহ অভিশাপ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। যেখানেই জঙ্গি তৎপরতার খবর পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে। সাধারণ মানুষও জঙ্গিবাদকে অপছন্দ করছেন। এরপরও নানাভাবে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম চলছে। সর্বশেষ দক্ষিণ খানে এক নারী জঙ্গি আত্মঘাতী হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জঙ্গিদের কৌশল পাল্টানোর বিষয়টি সামনে চলে আসছে। কথা এই যে, জঙ্গিরা যতোই কৌশলী হোক না কেন তাদের চেয়ে কৌশলে দক্ষতায় যোগ্যতায় অনেক এগিয়ে থাকতে হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। নইলে জঙ্গিবাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া কঠিন হবে।রাজধানীর দক্ষিণখানে জঙ্গিরা সংঘটিত হচ্ছিল। সেখানে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। গত শনিবার মধ্যরাত থেকে দক্ষিণখানের আশকোনার পূর্বপাড়ার ৫০নং বাসাটি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখে পুলিশ। পরে সকালের দিকে আত্মসমর্পণের কথা বলা হলে দুই শিশুকে নিয়ে ওই বাসাটি থেকে দুই নারী বেরিয়ে আসেন। এদের মধ্যে একজন সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জাহিদের স্ত্রী। অন্যজন পলাতক জঙ্গিনেতা মুসার স্ত্রী বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে আবারো আত্মসমর্পণের কথা বলা হলে এক নারী শিশুসহ বেরিয়ে এসে নিজের শরীরে থাকা গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান। এতে ওই শিশুও আহত হয়। আশকোনার ঘটনায় মোট দুইজন নিহত হন।এই অভিযানের পর নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে কৌশল পাল্টাচ্ছে জঙ্গিরা। সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক বিস্তারে পরিবারভিত্তিক ইউনিট গঠনের কৌশল নিয়েছে জঙ্গিরা। তারা পুরো পরিবারকে নিয়েই উগ্রপন্থায় যুক্ত হচ্ছে এবং প্রতিটি পরিবারকে একটি সন্ত্রাসী ইউনিট হিসেবে গড়ে তুলছে। নতুন এই প্রক্রিয়ার শিকার হচ্ছে তাদের শিশুসন্তানেরাও। জঙ্গিদের এই প্রবণতা অত্যন্ত ‘ভয়াবহ’। কেননা এতে একটি পরিবার চরমপন্থায় যুক্ত হলেও তা অন্য স্বজন বা আশপাশের লোকজনের চোখে সহজে ধরা পড়ে না। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেয়া সহজ হয়। জঙ্গিদের এই কৌশল পাল্টানো বড় আতঙ্কের ব্যাপার। তবে সর্বাত্মক প্রতিরোধ থাকলে অপশক্তির কোনো কৌশলই কাজ দিবেনা। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন থাকতে হবে। নিজ পরিবার থেকে শুরু করে আশপাশের সব কিছুর দিকেই নজর রাখতে হবে। শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে চেয়ে থাকলে চলবে না। তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও জনসম্পৃক্ততা আরো বাড়াতে হবে যাতে মানুষজন তাদের ওপর ভরসা করতে পারে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় দেশ জঙ্গিমুক্ত হোক-এটাই প্রত্যাশা।এইচআর/আরআইপি 

Advertisement