জাতীয়

জুলাইয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করে হামলার ঘটনায় ১৪ জনের নামে মামলা

জুলাই আন্দোলনের সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভারে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর হামলার অভিযোগে শেখ হাসিনা, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ বিদ্যুৎ বিভাগের ১৪ কর্মকর্তা ও আমলার নামে সাভার থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

Advertisement

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন মামলার বাদী ফরিদ আহমেদ।

এসময় লিখিত বক্তব্যে সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের সংগঠক ফরিদ আহমেদ দাবি করেন, জুলাই-আগস্টে যারা স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে বিদ্যুতের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বন্ধ করে দিয়ে গণহত্যা সংঘটনে ইন্ধন দিয়েছে, প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে, তারা এখনো নিরাপদে বিচরণ করছে, ক্ষেত্রবিশেষে পুরস্কৃতও হচ্ছে। যা জুলাই আন্দোলনে নিহতদের স্বজন ও আহতদের পীড়া দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদ আহমেদ অভিযোগ করেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভার এলাকায় ১৫ জুলাই থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ছাত্রদের আন্দোলন বানচাল করতে ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যেখানে সরাসরি ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোল্লা মো. আবুল কালাম আজাদ জড়িত ছিলেন।

Advertisement

তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর আওতাধীন। কোনো ধরনের কারিগরি ও যান্ত্রিক ত্রুটি না থাকার পরও শুধু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা মো. আবুল কালাম আজাদ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেন।

ফরিদ আহমেদের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে ইন্ধনদাতা হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্তী, সাবেক মেম্বার দেবাশীষ চক্রবর্তী, পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, পরিচালক শফিকুর রহমান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী বিশ্বনাথ শিকদার, পরিচালক এ কে এম ইস্কান্দার আলী, সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আসাফউদ্দৌলা, উপ-পরিচালক (কারিগরি) মো. নুরুন্নবী, প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রহিম মল্লিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. নুরুল আলম, প্রক্টর ড. আলমগীর হোসেনসহ মামলার ৪১ জন আসামি সরাসরি জড়িত ছিলেন। মূলত, তাদের সম্মিলিত পরিকল্পনায়ই সেদিন পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নিরীহ ছাত্র জনতার ওপর নির্মম আক্রমণ করে।

২৪ এর গণহত্যার সহযোগী এসব মানুষরূপী পশুদের স্বাধীনভাবে বিচরণের অধিকার নেই উল্লেখ করে ফরিদ আহমেদ বলেন, তাদের মুক্ত বিচরণ ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা হবে ২ হাজার শহীদ ও ৩০ হাজার আহতের রক্ত ও ত্যাগের সঙ্গে বেইমানি। যা এদেশের শান্তিকামী জনগণ মেনে নেবে না। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সচেতন কোনো মহল এ বিষয়ে এগিয়ে না আশায় আমরা হতাশ।

তিনি বলেন, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ইমানী দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের নামে মামলা দায়ের করেছি এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে দ্রুত জুলাই গণঅভ্যুত্থান নস্যাতের পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছি।

Advertisement

আরএএস/এএমএ/জিকেএস