সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের সুবিধাভোগী নির্বাচন বা বাছাইয়ে ‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি (ডিএসআর)’ নামে নতুন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। বাছাই প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে এ উদ্যোগ। ডাটা এন্ট্রির তথ্য নিয়ে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রযুক্তি জানিয়ে দেবে কে ভাতা পাওয়ার যোগ্য, কে যোগ্য না।
Advertisement
প্রাথমিকভাবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি (বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা) এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটিসহ (মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি) মোট চারটি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগী নতুন ব্যবস্থায় নির্বাচন করা হবে। আটটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে এ ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বলে জানায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র। এ বিষয়ে একটি পরিপত্রও জারি করা হয়েছে।
পুরোনো যারা ভাতা পাচ্ছেন, তাদের যাচাই-বাছাই করা হবে। আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত সব উপজেলাকে সময় দিয়ে এ যাচাইয়ের কাজটি হচ্ছে। ইউএনওদের বলা হয়েছে উপজেলায় এ সংক্রান্ত কমিটি আছে, তারা যাতে টিম করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে।- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খান
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সহায়তায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করবে। আবেদনকারী সুনির্দিষ্ট তথ্য সিস্টেমে প্রবেশ করাবেন, দারিদ্র্য সূচক বিবেচনায় তথ্য-প্রযুক্তিই নির্ধারণ করে দেবে তিনি ওই কর্মসূচির সুবিধাভোগী হিসেবে যোগ্য কি না।
Advertisement
অন্যদিকে অনিয়ম দূর করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের সরকারি সহযোগিতা নিশ্চিত ও সরকারি অর্থের অপচয় রোধ করতে বর্তমান ভাতাভোগীদের যাচাই-বাছাইয়ের কাজ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশনাও দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, যে সব ভাতাভোগীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই তাদের আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তা যুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে। এর মধ্যে এনআইডি যুক্ত করা না হলে ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে।
আগামী ৩০ এপ্রিলের পর জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া ভাতাভোগীদের ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে। এনআইডি যুক্ত করার জন্য তাদের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত কার্যক্রম সমন্বয় ও বাস্তবায়ন কৌশল নির্ধারণের কাজ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে রয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটি। ২০১৫ সালে ‘জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল’ প্রণয়ন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।দারিদ্র্য বিমোচন, বৈষম্য কমানো ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত মোট ১৪০টি কার্যক্রম ২৭টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ বাস্তবায়ন করছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা যায়।
Advertisement
চলতি অর্থবছর সামাজিক নিরাপত্তা খাতে এক লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরে যা ছিল এক লাখ ২১ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২২-এ তা হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ঘিরে জনপ্রশাসনে ফের অসন্তোষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতরা যেসব সুবিধা পাবেন ওয়াসা-রাজউক-সিটি করপোরেশনের সব সেবাই থাকবে ‘নগর সরকারের’ অধীন কঠোর হচ্ছে সব ধরনের ড্রোন ওড়ানোর নিয়মদারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এর সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা। জনগণের উল্লেখযোগ্য অংশ নানাবিধ কারণে এখনো দারিদ্র্য ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, দারিদ্র্য ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য নেওয়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা সময়ের সঙ্গে বেড়েছে। কিন্তু তথ্য-প্রমাণ থেকে এটাও দেখা যায় যে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এখনো এসব কর্মসূচির আওতায় আসেনি। একই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপসহ নানান অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি তো রয়েছেই।
নতুন ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি’ নিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি পরিপত্র জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এটি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিতরণও করা হয়েছে। পরিপত্রে বলা হয়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর উপকারভোগী বাছাই কার্যক্রম অধিকতর স্বচ্ছ ও লক্ষ্যভিত্তিক করার উদ্দেশ্যে সরকার ‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি (ডিএসআর)’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি’-তে দেশের যে কোনো নাগরিক অনলাইনে সরকারি সহায়তার জন্য সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। আবেদন ফরমে চাওয়া সাধারণ তথ্য কর্মসূচি নির্বিশেষে একই রকম থাকবে এবং তা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনের মাধ্যমে নিয়মিত হালনাগাদ করা হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতাপ্রাপ্তির আবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের নীতিমালা অনুযায়ী বিশ্লেষণ করে উপকারভোগী নির্বাচন করা হবে।
‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি’ সংক্রান্ত কার্যক্রম অর্থ বিভাগের সোশ্যাল প্রোটেকশন বাজেট ম্যানেজমেন্ট ইউনিটে (এসপিবিএমইউ) স্থাপিত সিগন্যাল রেজিস্ট্রি প্ল্যাটফর্মে ডায়নামিক ফিচার অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে বলেও পরিপত্রে জানানো হয়েছে।
‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি’ ব্যবস্থা চালু ও বাস্তবায়নে সাধারণ নির্দেশের বিষয়ে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচি এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচিসহ মোট চারটি কর্মসূচির উপকারভোগী নির্বাচন কার্যক্রম ‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি’র মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রির সিস্টেম উন্নয়ন, সার্ভার ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যমান এমআইএস ও অন্যান্য মাধ্যমের সঙ্গে আন্তঃসংযোগ স্থাপনের কাজ সম্পাদনের জন্য অর্থ বিভাগে এবং বিদ্যমান সিস্টেম উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও তথ্য হালনাগাদের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তরে বাস্তবায়ন ইউনিট থাকবে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য অর্থ বিভাগ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সমন্বয়ে একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি’ কার্যক্রম তদারকির জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে (সমন্বয় ও সংস্কার) আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে পরিপত্রে বলা হয়, স্টিয়ারিং কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সমন্বয় অনুবিভাগ) স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হিসেবে এবং যুগ্মসচিব (সিভিল রেজিস্ট্রেশন ও সামাজিক নিরাপত্তা) সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অর্থ বিভাগে গঠিত কো-অর্ডিনেশন কমিটি ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রির অগ্রগতি বিষয়ে নিয়মিতভাবে স্টিয়ারিং কমিটির কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
‘ডিএসআর তথ্য-উপাত্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অর্থ বিভাগ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর এবং ওই ডাটাবেজে প্রবেশ অনুমতিপ্রাপ্ত সব কর্তৃপক্ষকে প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’
প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি’ পদ্ধতিটি দেশের আটটি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। পরবর্তীসময়ে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে এর কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সারাদেশে বিস্তৃত করা হবে বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘নতুন করে যারা সুবিধাভোগী হিসেবে যুক্ত হবেন, মূলত তারা এ নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আসবেন।’
‘প্রথমে বড় চারটি ভাতার ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি চালু হবে। আটটি উপজেলায় পাইলট (পরীক্ষামূলক) আকারে হবে। তবে কোন কোন উপজেলায় হবে তা সংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয়ই নির্ধারণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘সফটওয়্যার এখনো প্রস্তুত হয়নি। এ সংক্রান্ত তথ্যগুলো পাওয়ার পর সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হবে। এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করে সব মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে। মূলত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিবিএসকে সঙ্গে নিয়ে এ কাজটি করবে।’
নতুন ব্যবস্থা সফল হলে সব কর্মসূচির ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা চালু হবে বলেও জানান সচিব মাহমুদুল হোসাইন।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ডিসি সম্মেলনে অধিবেশন শেষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ডিসিদের একটি বিষয় জানিয়েছি। আমরা যে সোশ্যাল রেজিস্ট্রি করি অর্থাৎ, উপকারভোগীদের আমরা যে সেবাটা দেই এর ৪৬ শতাংশ ত্রুটিপূর্ণ। অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে ভুল ৪৬ জনের কাছে ভাতার টাকাটা যাচ্ছে। এটি শুধু বিশাল অঙ্কের অপচয় নয়, যার পাওয়ার কথা সেই মানুষটা কষ্টে থেকে যায়। আমাদের যে রিফর্ম কমিশন আছে তাদের দিক থেকেও এ কথাটা ব্যক্ত করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবার নিবন্ধনটা করবো। আমরা চাই দ্রুত এই ত্রুটিগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে। যাতে আমাদের এই কষ্টের টাকাগুলো ঠিক মানুষের কাছে পৌঁছায়, আমরা যাতে এ অন্যায়কে রোধ করতে পারি।
৩০ মার্চ পর্যন্ত চলবে যাচাই-বাছাইমন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) বলেন, ‘পুরোনো যারা ভাতা পাচ্ছেন, তাদের যাচাই-বাছাই করা হবে। আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত সব উপজেলাকে সময় দিয়ে এ যাচাইয়ের কাজটি হচ্ছে। ইউএনওদের বলা হয়েছে উপজেলায় এ সংক্রান্ত কমিটি আছে, তারা যাতে টিম করে দিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে।’
সচিব বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ পেয়েছি। অনেক ক্ষেত্রে ভাতা পাওয়ার যোগ্য নন তারপরও তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। কোনো পরিবারে একজন পাওয়ার কথা সেখানে তিনজনও আছেন।’
‘এ বিষয়গুলো যাচাই হলে অনেকেই হয়তো বাদ পড়বেন। সেখানে নতুন ভাতাভোগীদের যুক্ত করা হবে। এতে সরকারের অর্থের অপচয় হবে না, একই অর্থ দিয়ে প্রকৃত যারা ভাতা পাওয়ার যোগ্য তাদের ভাতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে আমাদের অতিরিক্ত কোনো টাকাও লাগবে না।’
মার্চের মধ্যে যাচাই সম্পন্ন করে, পরে একমাস সময় দিয়ে নতুন ব্যবস্থায় ওই শূন্য স্থানে নতুন ভাতাভোগী যুক্ত হবেন বলেও জানান তিনি।
মাহমুদুল হোসাইন খান আরও বলেন, ‘আগামী ৩০ এপ্রিলের পর জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া ভাতাভোগীদের ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে। এনআইডি যুক্ত করার জন্য তাদের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।’
গুরুত্বপূর্ণ চারটি ভাতার সুবিধাভোগীযে চারটি কর্মসূচিতে নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হচ্ছে, সেখানে বর্তমানে প্রায় এক কোটি ৩৭ লাখের মতো ভাতাভোগী রয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির সুবিধাভোগী ৬০ লাখ ১ হাজার জন। এক্ষেত্রে মাথাপিছু মাসিক ভাতা ৬০০ টাকা। ২৭ লাখ ৭৫ হাজার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে জনপ্রতি মাসিক ভাতা ৫৫০ টাকা।
প্রতিবন্ধী ভাতা পান ৩২ লাখ ৩৪ হাজার জন, জনপ্রতি মাসে ভাতা পান ৮৫০ টাকা। অন্যদিকে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির অধীনে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিজন মাসে ৮০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন।
আরএমএম/এএসএ/জিকেএস