সেতু আছে। কিন্তু সেই সেতু দিয়ে চলাচল করা যায় না। উল্টো সেতুর ওপর বানানো হয়েছে বাঁশের সাঁকো। এখন এই সাঁকোই ভরসা এলাকাবাসীর। আবার এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে পড়ে আহতও হয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, নারী বৃদ্ধরা পড়েছেন বেশি বিপাকে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের খাগকান্দা এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র।
Advertisement
একই রাস্তায় নির্মিত পরপর দুটি সেতুরই একই অবস্থা। পার্শ্ববর্তী আরেকটি সেতু একেবারেই অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৮ সালে আড়াইহাজারের খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ যাওয়ার পথে রাস্তায় পাশাপাশি দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়। একই সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকায় আরেকটি সেতু নির্মাণ হয়। সেতুগুলো উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। যিনি বর্তমানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে আত্মগোপনে রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে- এই তিনটি সেতু নির্মাণে কোনো রকমের পাইলিং করা হয়নি। শুধুমাত্র ভাসমান পিলার দিয়েই করা হয়েছে নির্মাণকাজ। যে কারণে নির্মাণের বছর পার না হতেই বর্ষা মৌসুমে ডেবে গেছে সেতু। সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর লোকজন সেতু নির্মাণের নামে টাকা আত্মসাতের জন্য এই কাজটি করেছেন।
Advertisement
ফলে সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে বাবুর লোকজনদের পকেট ভরেছে, কিন্তু এলাকাবাসীর কোনো উপকার হয়নি। বর্তমানে চলাচলের জন্য বাঁশের সাঁকোই এলাকাবাসীর প্রধান ভরসা।
বর্তমানে তিনটি সেতুই ধসে পড়ে রয়েছে। সেতুর দুই পাশের মাটিও সরে গেছে। এ অবস্থায় জরুরিভাবে হাঁটাচলার জন্য সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধদের সেই সাঁকো দিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য। আর যানবাহন চলাচল তো একেবারেই বন্ধ। ফলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে কয়েক ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দা। অথচ সড়কটি খাগকান্দা থেকে শান্তির বাজার আসা-যাওয়ার সহজ রাস্তা।
ফিরোজ মিয়া নামে এক অটোরিকশা চালক বলেন, কোনো পাইলিং ছাড়াই ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। যার কারণে বর্ষা মৌসুমে এগুলো ডেবে গেছে। ব্রিজ দিয়ে আমাদের এলাকাবাসীর কোনো উপকার হয়নি। যারা ব্রিজ নির্মাণ করেছে তাদের পকেট ভরেছে। আর আমাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। আমাদের অনেক কষ্ট করেই যাতায়াত করতে হয়।
কবি নজরুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মীম বলেন, প্রতিদিন আমাদের বাঁশের সাঁকো পার হয়ে কলেজে যেতে হয়। যারা ছোট তারা অন্যের সহযোগিতা ছাড়া একা স্কুলে যেতে পারে না। অনেক সময় কেউ কেউ সেতু থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়। এই সেতু থাকা না থাকা আমাদের জন্য সমান কথা। আমাদের কোনো উপকারেই আসেনি।
Advertisement
আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/জেডএইচ/জিকেএস