প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আপনাকে ফুলের মালা দিয়ে আমরা বরণ করেছি, বিদায়ও জানাতে চাই ফুলের মালা দিয়ে। সেই পরিস্থিতিটা রাখুন। যেমনভাবে ফুল নিয়ে আপনাদের সামনে গিয়েছি, তেমনি আপনারা চলে যাওয়ার সময় যেন আপনাদের সামনে যেতে পারি। এই কথা আপনি যদি মাথায় রাখেন তাহলে দেখবেন সংকট কেটে যাবে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দুদু বলেন, সরকার প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসকে আমরা শুধু সমর্থনই দিই নাই, তার গতিপথ যাতে আরও ত্বরান্বিত হয়, আরও সুন্দর এবং চমৎকার হয় সে ধরনের সহযোগিতা আমরা তাকে করেছি। এখনও করছি, ভবিষ্যতেও করবো। তার ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
তিনি বলেন, সরকার সংস্কারের প্রশ্নে খুবই করিতকর্মা। কিন্তু ছয় মাসের যে সংস্কার সেই সংস্কার সম্বন্ধে দেশবাসী কিছুটা উদ্বিগ্ন। আমরাও উদ্বিগ্ন। তারা কি করেছে আমরা জানি না। তবে এতটুকু জানি বাজার এখনো ঠিক হয়নি। বাজারে যে আগুন জ্বলছিল সে আগুন এখনো নিভেনি। সিন্ডিকেট এখনো ধরা সম্ভব হয়নি।
Advertisement
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, পরিষ্কার কথা পেটে ভাত থাকতে হবে এবং বেকারদের কাজ থাকতে হবে। যদি মনে করেন আপনাদের পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়, তাহলে এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে মিটিংয়ে বসে দিন-তারিখ ঠিক করে, যারা পারবে তাদের পথ সুগম করেন এবং নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন।
সরকারের উদ্দেশ্য ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘এ সরকার কি পেরেছে আর কি পারেনি সেই আলোচনার আগে যদি বলি তারা শ্রমিককে হত্যা করেছে এই কথা সত্য। শেখ হাসিনাও শ্রমিক হত্যা করতেন। হাসিনা যেমন বিএনপির নেতাকর্মীকে খুন করেছেন এই সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে। এটা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। শ্রমিক হত্যা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নেতা হত্যা হয়েছে। পার্থক্যটা কি; এটা যদি কেউ প্রশ্ন করে তাহলে জটিলতা তৈরি হবে। এই কাজের জন্য আমরা আপনাকে (ড. ইউনূস) অভিনন্দন জানাবো তাহলেতো বিভ্রান্ত সৃষ্টি হবে। অনতিবিলম্বে দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে মানুষ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে জন-অসন্তোষ, বিক্ষোভের সৃষ্টি হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, যারা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে সেই ছাত্ররা এখন চিকিৎসা পাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য তাদের বিক্ষোভ করতে হচ্ছে। এর থেকে দুঃখজনক ঘটনা জাতির জন্য আর দ্বিতীয়টা হতে পারে না। আপনার বেতনের টাকা, আপনার উপদেষ্টাদের বেতনের টাকা যথাসময়ে যদি রাষ্ট্র পরিশোধ করতে পারে, সচিবদের বেতনের টাকা, পুলিশের বেতনের টাকা যদি রাষ্ট্র পরিশোধ করতে পারে- যাদের অস্ত্র এদের পঙ্গু বানিয়েছে, তাহলে হাসপাতালের টাকা কেন পরিশোধ হয় না। চিকিৎসার জন্য তাদের বিক্ষোভ করতে হয় কেন। এমন প্রশ্ন যদি সামনে আসে, তাহলে আমাদের জন্য বিব্রতকর। কারণ আমরা এই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছি। এই জিনিসটা সরকার যদি মাথায় রাখে তাহলে ভালো হবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
Advertisement
কেএইচ/এমআইএইচএস/এমএস