আইন-আদালত

বিগত সরকারের আমলে ৪৩০ বার কজলিস্টে এসেও হয়নি আপিল শুনানি

আলোচিত রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য সাবেক সরকারের সময়ে ৪৩০ বার কজলিস্টে আসে। কিন্তু আলোচিত এ মামলায় এতদিনেও শুনানি হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে।

Advertisement

গত রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আসামি আকবর হোসেনের বিষয়ে শুনানি নিয়ে আজ পর্যন্ত মূলতবি করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মামলায় পরবর্তী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে।

আদালতে আজ শুনানি করছেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এসএম শাজাহান।

সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, মামলাটিতে ২০১৬ সালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের (আপিল বিভাগের বিচারপতি) নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য ছিল। ওই বেঞ্চে শুনানি শুরু হলেও পরে আদালতের এখতিয়ার পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটির শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে মামলাটি হাইকোর্টের আরও কয়েকটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় এলেও আদালতের এখতিয়ার পরিবর্তন ও বেঞ্চের বিচারকের পরিবর্তন এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে দীর্ঘদিন পর মামলাটি শুনানির জন্য আবারও হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় আসে।

Advertisement

ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চে ২০২১ সালের ২৪ জুন দিন ধার্য ছিল। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। কিন্তু এক বিচারপতি আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলে ওই বেঞ্চটি ভেঙে যায়। ফলে মামলার নথি চলে যায় প্রধান বিচারপতির কাছে।

তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান বেঞ্চে শুনানি চলছে।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ ১৪০৮ বঙ্গাব্দ) ভোরে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে সেগুলো বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সেদিন বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলাকালে সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি ও ১০টা ১৫ মিনিটের পর অন্য বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন আরও অনেকেই। এ ঘটনায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে সেদিনই রমনা থানার পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি মামলা করে।

২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর শীর্ষ হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক।

Advertisement

এফএইচ/এমএইচআর/জেআইএম