কৃষি ও প্রকৃতি

পেঁয়াজের বীজে লাভবান রাজশাহীর চাষিরা

প্রতি বছরই রাজশাহীতে নির্ধারিত একটি সময়ে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যায় এই দাম। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এবং পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

Advertisement

মৌসুম ছাড়াও অমৌসুমে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী করতে কাজ করে কৃষি বিভাগ। এর প্রভাবেই বাজারে এবছর পেঁয়াজের দাম রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের ভেতরেই। তবে পেঁয়াজ চাষ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে পেঁয়াজের বীজের চাহিদাও। চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং ভালো দাম পাওয়ায় রাজশাহীতে পেঁয়াজের বীজ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার ২৫৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করা হয়েছে। এ থেকে ২১০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তারা। এসব বীজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায়ও সরবরাহ করা যাবে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।

আরও পড়ুন: বেড়েছে তরমুজ চাষ, ভালো বিক্রির আশা কৃষকের

Advertisement

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চাষি মোহাম্মদ নাজিম। গত বছর চাষ করেছিলেন পেঁয়াজের বীজ। এক বিঘা জমিতে চাষ করে ভালো লাভবান হয়েছিলেন। ফলে এবার জমি লিজ নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গতবার বীজ চাষ করে ১ লাখ টাকার মতো লাভ হয়েছে। তাই এবার বেশি করে চাষ করেছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে। গতবারের মতো দাম পেলে ভালো লাভ হবে।’

রাজশাহীর গোদাগাড়ী এলাকার চাষি আব্দুর রহিম এক বিঘা জমিতে বীজ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমবার চাষ করছি। শুরুতে বুঝতে সমস্যা হয়েছে। তা ছাড়া পেঁয়াজের ফুল এক মাস ধরে ফোটে। এক সঙ্গে এত মৌমাছিও পাওয়া যায় না। পরে শ্রমিক দিয়ে হস্ত পরাগায়ন করেছি। আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যেই বীজ তুলে ফেলতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘নিজের জমিতে চাষ করেছি। এক বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে ৫৮ হাজার টাকা। যা ফলন দেখছি, তাতে সব মিলিয়ে আমার ৮০-৯০ হাজার টাকা লাভ হতে পারে।’

আরও পড়ুন: ঈশ্বরদীর পদ্মার চরে ফসলের সমারোহ 

Advertisement

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, ‘গত বছর বেশ ভালো দাম পাওয়ায় এবার বীজ চাষ কিছুটা বেড়েছে। এবার যে বীজ উৎপাদন হবে, তা দিয়ে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায়ও সরবরাহ করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের বীজ চাষে মৌমাছি নিয়ে সমস্যা হয়। বীজের পরাগায়নে সমস্যা হয়। তবে আমরা কৃষকদের হস্ত পরাগায়নের পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়াও সাদা কাপড়ের মাধ্যমে পরাগান ঘটানোর কথা বলেছি। এতে বীজ ভালো মানের ও বেশি ফসল উৎপাদন হবে।’

এসএইচ/এসইউ/জিকেএস