ফিচার

এখনো প্রাচীন ভাষা টিকে আছে যে গ্রামে

ভাষা মানুষের অমূল্য সম্পদ। তবে যুগে যুগে তা পরিবর্তিত হয়েছে। যেমন ভারত বর্ষের প্রাচীন ভাষা সংস্কৃত। যা পরিবর্তিত হতে হতে বিভিন্ন ভাষায় রূপ নিয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, প্রাচীন কালের সেই সংস্কৃত ভাষা এখনো টিকে আছে। টিকে আছে শুধু একটি গ্রামে।

Advertisement

জানা যায়, সংস্কৃত ভাষাকে টিকিয়ে রাখা সেই গ্রামের নাম মাত্তুর। ভারতের কর্ণাটকের শিমোগা জেলার তুঙ্গ নদীর তীরে অবস্থিত এ গ্রাম। যে গ্রামের সবাই কথা বলেন সংস্কৃত ভাষায়। এমনকী ঝগড়া করতে হলেও শব্দরূপ, ধাতুরূপের প্রয়োগ করে। সেখানে ক্রিকেট বা ফুটবলের ধারা বিবরণও হয় সংস্কৃতেই।

স্থানীয়রা জানান, একসময় এ গ্রাম দ্রাবিড় অধ্যুষিত ছিল। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবই বদলে গেছে এখন। এখানকার মানুষ পড়াশোনা শিখে চাকরিসূত্রে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন স্থানে। তবে সবারই হাতেখড়ি হয়েছে সংস্কৃত ভাষায়। এখনো এখানে কথ্যভাষা সংস্কৃত।

শিক্ষার্থীরা জানান, যুগের চাহিদায় অবশ্য কন্নড়‚ তেলেগু‚ তামিল ভাষাও সংস্কৃতের সঙ্গে মিশেছে। তবে সংস্কৃতের মূল ব্যকরণ বাসিন্দারা কঠিনভাবে অনুসরণ করে। গ্রামের সব মানুষই ঝরঝরে সংস্কৃত ভাষায় কথা বলতে পারেন। এমনকী সরকারিভাবে এ গ্রামের নাম ‘সংস্কৃত গ্রাম’।

Advertisement

প্রবীণরা জানান, তারা অন্তর থেকেই সংস্কৃতকে আপন করে নিয়েছেন। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও সাবলীলভাবে সংস্কৃত বলতে পারে। দশ বছর বয়সেও ছেলে-মেয়েরা পড়ে ফেলতে পারে বেদ বা উপনিষদ। আসলে সংস্কৃত ভারতের প্রতিটি ভাষার আঁতুরঘর। তাই এ ভাষা শেখা অনেক সহজ।

গ্রামবাসী জানান, এর বেশিরভাগ কৃতিত্বই ‘সংস্কার ভারতী’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। প্রতিদিন এখানে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী সংস্কৃত ভাষা শেখে। স্কুলটি প্রাচীন ভাষাকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে। আর সেই উদ্যোগেই স্কুল কর্তৃপক্ষ পাশে পেয়েছে পুরো মাত্তুর গ্রামকে।

এসইউ/এমকেএইচ

Advertisement