দেশজুড়ে

প্রশাসনকে বলেও কাজ হয়নি, নিজেরাই করল সাঁকো সংস্কার

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের ডুবলদিয়া-হাওলাদারকান্দি-আকনকান্দি সড়কের খালের ওপরের বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সাঁকোটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অবশেষে চলাচলের জন্য গ্রামবাসী ওই সাঁকো সংস্কার করে নিয়েছেন।

Advertisement

জাজিরা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম ডুবুলদিয়া, হাওলাদারকান্দি ও আকনকান্দি। শরীয়তপুর-ঢাকা সড়ক থেকে ওই তিন গ্রামে যাতায়াতের জন্য একটি মাটির কাঁচা সড়ক রয়েছে। গত বছর গ্রামবাসী ওই সড়ক স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করেন। সড়কটির একটি অংশে খাল রয়েছে। খালের ওপর সাঁকো দিয়ে গ্রামবাসী যাতায়াত করতেন।

গত বছর সড়ক সংস্কার ও প্রশস্ত হওয়ায় গ্রামবাসী বাঁশের সাঁকোটি প্রশস্ত ও মজবুত করেন। তখন ওই সড়ক দিয়ে রিকশা-ভ্যান চলাচল শুরু করে। সেই সঙ্গে বড়কান্দি ও পালেরচর ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের মানুষ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। এর মধ্যে সাঁকোটি ভেঙে পড়ে। দীর্ঘদিন স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনকে বলেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে নিজেরাই সাঁকোটি সংস্কার করে নেন।

হাওলাদারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান সাঁকোটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। সাঁকোটি সংস্কার করার জন্য গ্রাম থেকে কিছু টাকা উত্তোলন ও বাঁশ সংগ্রহ করা হয়।

Advertisement

আব্দুর রহমান বলেন, পড়ালেখা শেষ করে চাকরির চেষ্টা করছি। বাড়িতে যখন আসি অনেক কষ্ট লাগে। গ্রামের মানুষের চলাচলের সড়কের খারাপ অবস্থা দেখে বসে থাকতে পারিনি। গ্রামের কিছু মানুষ নিয়ে নিজে সাঁকো সংস্কার কাজে নেমে পড়ি। অনেকে এগিয়ে এসেছেন। কেউ নগদ টাকা, কেউ বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সহায়তা করেছেন।

আকনকান্দি গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শামছুদ্দিন হাওলাদার বলেন, এই সাঁকো দিয়ে ১২টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ে গ্রামবাসী। গ্রামের যুবকরা এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে আমরাও সামিল হয়েছি। প্রশাসনের আশায় বসে না থেকে নিজেরাই সাঁকোটি সংস্কার করে নিয়েছি।

জাজিরার বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন, দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তর থেকে ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। যেহেতু সরকারি একটি প্রকল্প থেকে সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে সেহেতু নতুন করে ওই স্থানে কোনো টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না। তাই সাঁকোটি সংস্কার করা হয়নি।

এ ব্যাপারে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, ডুবুলদিয়া, হাওলাদারকান্দি ও আকনকান্দি গ্রামের সড়কটির চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য সেতু নির্মাণ করা হবে। এলজিইডি থেকে ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সেতুর নির্মাণকাজের উদ্যোগ নেয়া হবে। মো. ছগির হোসেন/এএম/এমএস

Advertisement