দেশজুড়ে

আদালতে ৪ ঘণ্টা ধরে শ্যালিকাকে ধর্ষণের বর্ণনা দিলো দুলাভাই

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই (দক্ষিণ) ইউনিয়নের শালগাঁও গ্রামে স্ত্রীকে অচেতন করে শ্যালিকাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে অভিযুক্ত নাঈম ইসলাম (২৭)।

Advertisement

রোববার বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নাঈমের জবানবন্দি গ্রহণ করেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরওয়ার-ই আলম। এদিন সকালে নাঈমকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার ভোররাতে নাঈমকে সদর উপজেলার তালশহর (পূর্ব) ইউনিয়নের অষ্টগ্রামের মামার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শ্যালিকা তামান্না আক্তারকে (১৫) ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে নাঈম। রোববার তাকে আদালতে তোলা হয় জবানবন্দি নেয়ার জন্য। আদালতে জবানবন্দি দেয়ার সময় নাঈম কয়েকবার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। এ সময় ভুল করেছে বলেও আদালতকে জানায়।

স্বীকারোক্তিতে নাঈম আদালতকে জানায়, বাবা বসু মিয়ার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সড়ক বাজারে নৈশপ্রহরীর কাজ করে সে। সপ্তাহে একদিন রাতে স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে থাকার সুযোগ পায়। গত বুধবার (২০ জুন) বাড়িতে থাকায় বিকেলে স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। রাতে টিনের ঘরের এক কক্ষে নাঈম স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে শুয়ে পড়ে। পর্দা দেয়া পাশের কক্ষে ঘুমায় শ্যালিকা তামান্না আক্তার। রাত ১টার দিকে তামান্নাকে ধর্ষণ করা হয়।

Advertisement

ধর্ষণ শেষে যাওয়ার সময় তামান্না চিৎকার শুরু করলে শ্বাসরোধে হত্যা করে নাঈম। সকালে বাড়ির লোকজনকে বলে দিতে পারে এই ভয়ও নাঈমের মধ্যে কাজ করেছে। শ্যালিকাকে হত্যার পর পুনরায় স্ত্রী স্মৃতি আক্তারের পাশে শুয়ে পড়ে নাঈম।

এদিকে, গতকাল শনিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় তামান্নার বাবা নোয়াব আলী বাদী হয়ে নাঈমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। নিহত তামান্না সদর উপজেলার আমিনপুর গ্রামের নোয়াব আলীর মেয়ে। সে কালিশীমা-শালগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে পড়তো।

গত সোমবার (১৭ জুন) বোন স্মৃতি আক্তারের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসে তামান্না। ১৯ জুন রাতে নাঈম তার স্ত্রী স্মৃতি আক্তার ও শিশুকন্যা জান্নাতকে আমের জুস খাইয়ে অচেতন করে তামান্নাকে ধর্ষণ এবং হত্যা করে। এ ঘটনার পর লজ্জায় ও মামলায় আসামি হওয়ার ভয়ে নাঈমের বাবা বসু মিয়া গতকাল শনিবার ভোরে জেলার নবীনগর উপজেলার গোসাইপুর গ্রামে তার এক আত্মীয়ের বাড়ির পাশে গাছের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।

আজিজুল সঞ্চয়/এএম/এমএস

Advertisement