এ যেন পান-সুপারির কেরামতি। স্বপ্নে পাওয়া পান-সুপারি ও গাছের ডাল দিয়ে ডায়াবেটিস রোগ সারিয়ে তোলার দাবি করেছেন মেহেরপুরের সাহারবাটি গ্রামের কবিরাজ মজিদুল।
Advertisement
সেইসঙ্গে অন্ধবিশ্বাসে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মজিদুলের বাড়িতে ছুটে আসেন রোগীরা। অনেকেই ডায়াবেটিস নিরাময় হচ্ছে বলে দাবি করলেও তার কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এটি অপচিকিৎসা ছাড়া কিছুই নয়। এতে ডায়াবেটিস রোগ নিরাময় হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এসব ভুয়া।
মজিদুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, উঠানে লম্বা লাইন। সবার সামনে বসে আছেন মজিদুল। স্বপ্নকন্যার দেখানো ২১টি পান-সুপারিতে রোগীকে ঝাড়ফুঁক করছেন তিনি। রোগীকে খাওয়ানো হচ্ছে একটি গাছের ডাল। এভাবে ডায়াবেটিস রোগের অভিনব চিকৎসা দিয়ে যাচ্ছেন গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের দিনমজুর কবিরাজ মজিদুল ইসলাম।
Advertisement
এ বিষয়ে মজিদুল ইসলাম বলেন, স্বপ্নে পাওয়া পান-সুপারি, গাছের ডাল এবং স্বপ্নকন্যার দেখানো ২১টি পদসহ ঝাড়ফুঁক চিকিৎসায় ভালো হয় ডায়াবেটিস।
কিন্তু কোনো রোগী এই চিকিৎসায় ভালো হয়েছেন কিনা তার কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি মজিদুল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজ চাইলেও দেখাতে পারেননি তিনি। মজিদুল বলেন, মানুষ বলে চিকিৎসা নিয়ে উপকার হয়, তাই বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ছুটে আসেন আমার কাছে।
এলাকাবাসী জানান, সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন ডায়াবেটিস রোগীরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে রোগী দেখা। দিনে ৪শ থেকে ৫শ রোগীর চিকিৎসা দেন মজিদুল।
এ বিষয়ে মেহেরপুর গাংনী জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন বলেন, এটি শরিয়াহসম্মত চিকিৎসা নয়। এভাবে ডায়াবেটিস রোগ নিরাময় সম্ভব নয়। ইসলামে স্বপ্নে পাওয়া এসব কবিরাজির কোনো বিধান নেই।
Advertisement
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা মো. শাহিন আলি বলেন, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ডায়াবেটিস চিকিৎসার সঙ্গে পান-সুপারির কোনো সম্পর্ক নেই। তবে জগ, ডুমুর, জাম ও মেহগনি গাছের ফলের বীজ খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
মেহেরপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, এখন পর্যন্ত ডায়াবেটিস রোগ নির্মূলের কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। এটা অপচিকিৎসা ছাড়া কিছুই নয়। ওই কবিরাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আসিফ ইকবাল/এএম/পিআর