আন্তর্জাতিক

ভারতে মেয়েদের জন্ম বন্ধ করে দেয়ার হুমকি

‘প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ের বিয়েতে নাক গলানোর অধিকার নেই কারো’ ভারতের খাপ পঞ্চায়েতকে এই বার্তা দিয়েছিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আর তার দুদিন কাটতে না কাটতেই ওই আদালতকেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খাপের নেতারা।

Advertisement

বললেন, তাদের সমাজে দীর্ঘদিন থেকে চলা ঐতিহ্যে কোর্টের হস্তক্ষেপ তারা মানবেন না। আর যদি কেউ এ ব্যাপারে মাথা ঘামাতে চায়, তা হলে মেয়েদের জন্ম দেয়াই বন্ধ করে দেবেন! এমনই হুমকি দিলেন ওই নেতারা।

পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে নবদম্পতিদের খুনের একের পর এক ঘটনায় খাপ পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। খাপকে নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে মামলা হয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে। সেই মামলাতেই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ জানান, প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ব্যক্তি কিংবা সমাজ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সমাজের বিবেকের ভূমিকায় বসার দরকার নেই খাপ পঞ্চায়েতের।

এর পরেই খাপ নেতারা এই হুমকি দিলেন। বালন খাপের প্রধান নরেশ টিকায়েত বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমাদের সমাজে যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঐতিহ্যের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করতে চাইলে তা মেনে নেয়া যায় না। আদালত যদি এই ধরনের রায় দেন তা হলে আমরা মেয়েদের জন্ম দেয়াই বন্ধ করে দেব। অথবা, তাদের এতটা লেখাপড়া শেখাব না, যাতে তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারে ‘

Advertisement

সমাজে মেয়েদের সংখ্যা কমে গেলে কী হাল হতে পারে, সেটা ভেবে দেখার জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

মালিক খাপের প্রধান রাজবীর সিংহ মালিক বলেন , ‘বড় বড় শহরে আধুনিকতার যে কুৎসিত প্রকাশ, সম্ভবত তাতেই প্রভাবিত হয়ে নিজেদের অবস্থান নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তাদের বোঝা উচিত গ্রামের জীবন আলাদা। ঐতিহ্যকেই মেনে চলতে হবে আমাদের।’

তাঁর যুক্তি, ‘মেয়েদের পড়ানোর জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। কিন্তু বড় হয়ে মেয়ে যদি অভিভাবকদের কিংবা সমাজকে অসম্মান করে সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’

তোমর খাপের নেতা চৌধুরী সুরেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘এটা নীতির ব্যাপার যা আমরা সন্তানদের শিখিয়েছি। এর মধ্যে কোর্টের কী করার আছে? আর ওদের কথা কে শোনে’। খাপ নেতারা যেভাবে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্যের সমালোচনায় নেমেছেন তাতে অনেকেই ক্ষুব্ধ। তাদের মতে, খাপের যে সংকীর্ণ মনোভাব সামনে উঠে এসেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের কড়া অবস্থান কতটা জরুরি ছিল।

Advertisement

সূত্র : আনন্দবাজার

জেডএ/এমএস