সামগ্রিকভাবে আইন ব্যবস্থার সংকট রয়েছে উল্লেখ করে তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আমাদের দেশের আইন ডিজিটাল ব্যবস্থার জন্য উপযোগী নয়। কমপক্ষে এক-দেড়শ’ আইন পাল্টাতে হবে, সংশোধন করতে হবে, নতুন আইন করতে হবে। তাহলে ডিজিটাল ব্যবস্থার সাথে তাল মেলানো সম্ভব উল্লেখ করেন তিনি। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রাজধানীর প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত স্বাধীন গণমাধ্যমের অবস্থান ও তাৎপর্য বিষয়ক ‘কনসালটেশন উইথ পার্লামেন্টারিয়ানস দ্যা আইসিটি অ্যাক্ট, ২০০৬’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় নিজের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। মোস্তফা জব্বার বলেন, আমাদের সংকট শুধু মাত্র আইসিটি অ্যাক্ট ২০০৬ না, আমাদের সামগ্রিক পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। কারণ প্রতিনিয়ত আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হচ্ছে। সে কারণে আমাদের আইন ও নীতিমালা তৈরি, পরিবর্তন ও বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। ২০০৬ সালের তথ্য প্রযুক্তি আইন ডিজিটাল অপরাধ দমনের উদ্দেশ্যে করা নয়, ডিজিটাল সিগনেচার কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল। তবে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভিশন ২০২০ কর্মসূচি হতে নেয়ার পর এই আইনের গুরুত্ব বেড়েছে। দেশ বরেণ্য এ আইটি বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘কোনো কোনো আইন আছে, যা শত বছর আগের। কিন্তু এই ১০০ বছর আগের আইন বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রয়োগযোগ্য নয়।’ তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল অপরাধী যারা তাদের দমনে যেন একটি আলাদা আইন করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন আইন করা সম্ভব না হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত সরকারকে কিভাবে ডিজিটাল অপরাধীদের দমন করা যায় সে বিকল্প পথ খুঁজেই যেতে হবে। অনুষ্ঠানে দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর এ চেয়ারম্যান বলেন, গত ৬ বছরে বাংলাদেশ দুটো মাইল ফলক পেরিয়েছে, তা হলো সম্প্রচার নীতিমালা ও খসড়া অনলাইন নীতিমালা। ইতোমধ্যে এসব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ প্রেক্ষিত বিবেচনা করে নীতিমালা দুটো তৈরিতে যথাসম্ভব ভালো প্রচেষ্টা ছিল। সম্প্রচার আইন ও সম্প্রচার কমিশন যদি গঠন করা যায় তাহলে আরো ভালো হয়। বিজয় কি-বোর্ড ও কম্পিউটারে বাংলা লেখার সফটওয়্যার প্রণেতা মোস্তফা জব্বার বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, আমরা যখন অনলাইন নীতি প্রণয়ন করছি তখন ভারত, আমেরিকার মতো দেশেও অনলাইন নীতমালা নেই। তারা বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিচ্ছে কিভাবে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হয়। এখন সংকট অনলাইন একটিভিস্ট আর ব্লগারদের কোন ক্যাটাগরিতে রাখতে হবে। ব্লগাররা আসলে কী, তারা কি সাংবাদিক, নাকি অন্য কিছু, তা স্পষ্ট করতে হবে। আর্টিক্যাল ১৯-এর বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক তাহমিনা রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন আর্টিক্যাল ১৯-এর নির্বাহী পরিচালক থমাস হিউজ। ব্রিটিশ হাই কমিশনের পলিটিক্যাল শাখার প্রধান অ্যাড্রিয়ান জন, সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, শিরিন আকতার, হোসনে আরা বেগম ডালিয়া, রুস্তম আলী ফরাজিসহ সাংবাদিক এবং অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা।জেইউ/এসএইচএস/আরআইপি
Advertisement