আইন-আদালত

রানা প্লাজার রানার প্রথম দণ্ড

সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের দণ্ড দেয়া হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস এ রায় ঘোষণা করেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর রানার কারাদণ্ডের বিষয়টি জাগো নিউজকে জানান। তিনি বলেন, গত ২২ আগস্ট মামলার যুক্তি-তর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করেন বিচারক। মামলাটিতে নয়জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়।

রায়ের পর রানার আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, কারা কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে আজ রানার এ সাজা হয়েছে। দুদক যখন নোটিস দেয় তখন রানা কারাগারে ছিল। সেই সময় তার সঙ্গে কোনো আইনজীবী ও পরিবারের কাউকে দেখা করার সুযোগ দেয়া হয়নি। যে কারণে নোটিসের জবাব দিতে পারেননি রানা।

Advertisement

সময় মতো দুদকের নোটিসের জবাব দিতে পারলে আজ রানার এ সাজা হতো না বলেও জানান তিনি।

রানার বিরুদ্ধে হত্যা, ইমারত নির্মাণে ত্রুটিসহ নানা অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা ঢাকার আদালতে বিচারাধীন। রানা প্লাজাধসের পর দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে আজই প্রথম কোনো মামলার রায় হলো। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম ওই দুর্ঘটনার পর এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে চার বছরেরও বেশি সময়।

২০১৩ সালের এপ্রিলে সাভারে সোহেল রানার মালিকানাধীন বহুতল বাণিজ্যিক ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়লে তা বিশ্বব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি করে। ওই ধসে ভবনে থাকা পাঁচটি পোশাক কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক মারা যান।

ধসের পর পালিয়ে যাওয়া রানাকে কয়েকদিন পর যশোর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তখন থেকে বন্দি তিনি।

Advertisement

গ্রেফতারের পর রানার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। সম্পদের হিসাব দাখিল না করার মামলাটিও হয় তখনই।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, সোহেল রানা তার নিজের, স্ত্রী এবং তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে-বেনামে অর্জিত স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ ও সম্পত্তি, দায়-দেনা, উৎস এবং তার অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী দাখিলের জন্য ২০১৩ সালের ২২ মে নোটিস ইস্যু করে দুদক।

তবে রানা কাশিমপুর কারাগারে থাকায় দুদক ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল ওই নোটিশ পুনরায় কারাগারে পাঠায়। কিন্তু সম্পদ বিবরণীর ফরম পূরণ না করেই রানা তা ফেরত পাঠান বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এতে বলা হয়, ‘২০১৫ সালের ৪ এপ্রিল নিজ স্বাক্ষরে বিবরণী নোটিশ গ্রহণ করেন রানা। কিন্তু নোটিশের বিধি মোতাবেক সাত কার্যদিবসের মধ্যে রানা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি।’

এরপর ওই বছরের ২ মে দুদকের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলম রমনা থানায় সম্পদের হিসাব দাখিল না করার অভিযোগ এনে রানার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

তদন্ত করে ২০১৬ সালের ১ আগস্ট আদালতে রানার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা পড়ে। ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

জেএ/এমএআর/এনএফ/জেআইএম