মতামত

জাতীয় ওষুধ নীতির সুফল পাক মানুষ

নিম্নমান এবং ভেজাল ওষুধ বিতরণ ও সংরক্ষণরোধে জাতীয় ওষুধ নীতি ২০১৬ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে নতুন এ আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়।  ২০০৫ সালে দেশে প্রথম ওষুধ নীতিমালা হয়েছিল। গত ১১ বছরে তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাই নীতিমালা আপডেট করার জন্য এ নতুন আইনের প্রয়োজন হয়েছে। এটা খুবই স্বস্তির বিষয় যে ওষুধের মান রক্ষা ও ভেজাল রোধে যুগোপযোগী আইন করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী। নতুন আইনে বলা হয়েছে, প্রতিটি ওষুধের জন্য পৃথক পৃথক নিবন্ধন লাগবে এবং প্রতিবছর ওষুধের মূল্য হালনাগাদ করে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। সত্যি বলতে কি জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও এখন ভেজাল। এছাড়া ওষুধের মূল্য নিয়েও চলছে যাচ্ছেতাই অবস্থা। এর নিরসন প্রয়োজন। দুঃখজনক হচ্ছে যে, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র মতে, ওষুধ উদ্ভাবনকারী ছাড়া জেনেরিক বা বর্গনামে ওষুধ প্রস্তুত করাই হচ্ছে নকল ওষুধ। তৃতীয় বিশ্বের প্রতিটি দেশেই বর্গনামে ওষুধ প্রস্তুত চলছে। ফলে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। অনেক কোম্পানি জেনেশুনে জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অথচ বাংলাদেশে ওষুধ একটি বিকাশমান শিল্প। ১২২টি দেশে আমাদের তৈরি ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতেও ওষুধশিল্প বড় ভূমিকা রাখছে। শুধু তাই নয়, জীবন রক্ষাকারী মূল্যবান অনেক ওষুধও এখন আমাদের দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় শুধু জনস্বার্থই নয়, কোম্পানিগুলোর নিজ স্বার্থেও ওষুধের মান ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি।মনে রাখা দরকার ওষুধ কোনো সাধারণ পণ্য নয়। জীবন রক্ষার জন্য ওষুধের গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য ওষুধ কোম্পানিগুলো যাতে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেটি জোর নজরদারিতে রাখতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে সরকারের অর্জন কম নয়। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে সেটি ভেস্তে যাক এটি কাম্য হতে পারে না। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এ বিষয়ে আমরা সরকারের কঠোর অবস্থান দেখতে চাই। এইচআর/পিআর

Advertisement