ময়মনসিংহে চালের দামে অসন্তুষ্ট নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা। ১৫ দিন আগের কেজিতে চার টাকা বাড়িয়ে গত সপ্তাহে কমানো হয়েছে দুই টাকা। অথচ বাজারে চাল সরবরাহের কমতি নেই।
Advertisement
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় যাদব লাহেড়ী লেন রোডে চালের সবচেয়ে বড় পাইকারি দোকানগুলো ঘুরে জানা যায়, ২৫ কেজির নাজির শাইল এক হাজার ৮৫০ টাকা, বিআর পুরাতন ২৮ ও ২৯ জাতের চাল এক হাজার ৬০০, কাটারি এক হাজার ৮৫০, চিনিগুড়া আড়াই হাজার ও চিনিগুড়া উন্নত তিন হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এগুলো ২৫ কেজির প্রতি বস্তায় ১০০ টাকা ও কেজিতে দুই টাকা কমেছে। ১৫ দিন আগে এগুলোর দাম কেজিতে চার টাকা করে বাড়ানো হয়। তবে মিনিকেট ২৫ কেজির বস্তায় ১০০ টাকা ও প্রতি কেজিতে বেড়েছে দুই টাকা।
ক্রেতারা জানান, প্রত্যেক দোকানে প্রচুর চাল রয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী গোডাউন ভর্তি করে মজুদ করেছেন। অথচ হঠাৎ করেই দাম বাড়ে।
তবে পাইকারি বিক্রেতারা জানান, ময়মনসিংহ সদরের শম্ভুগঞ্জ, জেলার তারাকান্দা, মুক্তাগাছা ছাড়াও নেত্রকোনা, শেরপুর, টাঙ্গাইল ও দিনাজপুরের হিলির মিলারদের কাছ থেকে চাল আনা হয়। এরপর খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। মিলারদের ইশারায় দাম ওঠানামা করে। এতে ময়মনসিংহের বিক্রেতাদের হাত নেই।
Advertisement
পাইকারি বিক্রেতা মাহফুজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে মাত্র দুই টাকা। অথচ ১৫ দিন আগে বাড়ানো হয়েছিল ৪টাকা। মিলাররা দাম বেশি রাখায় আমাদেরও কিছু বেশি রাখতে হয়। তবে হাত ঘুরে খুচরা পর্যায়ে দাম আরও বাড়ানো হচ্ছে।
নাসির উদ্দিন নামের আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রত্যেকটা গোডাউনেই প্রচুর চাল রয়েছে। নতুন চালগুলোও বাজারে এসেছে। তবে আমরা তেমন কম দামে কিনতে পারছি না বলে আশানুরূপ কমছে না।
বাজার করতে আসা খোকন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। বছর ঘুরলেও বেতন বাড়ে না। তবে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে পকেট ভারি করছেন। বর্তমানে সবজি ও মাছের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তবে চাল দামে অসন্তুষ্ট নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকজন। সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত বাজার তদারকিসহ অভিযান চালানো প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, বিভিন্ন বাজারে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। অনেক ব্যবসায়ীকে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। তবে আমরা চলে আসার পর অনেকে আবারও দাম বাড়িয়ে দেন।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য নিত্যপণ্যসহ চালের পাইকারি, খুচরা ও মিলেও অভিযান চালানো হবে। কেনার রশিদ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ করে বিক্রি করতে হবে। ভুয়া রশিদ কিংবা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো দামে বিক্রির প্রমাণ মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এএইচ/জিকেএস