নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ‘স্মল এন্টারপ্রাইজ খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ গঠন করেছে বাংলাদেশ বাংক। এ তহবিলের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৪৩৬ জন নারী উদ্যোক্তাকে অর্থায়ন করা হয়েছে। তাদের সবাই এখন স্বাবলম্বী। এর আগে তহবিলের আকার ছিল এক হাজার ৫০০ কোটি। দিন দিন তহবিলটি নারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় আকার করা হয়েছে দ্বিগুণ। ২০২৩ সালে তহবিলের আকার বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা।
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এ তহবিলের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদের হার ৫ শতাংশ। ব্যাংক পর্যায়ে দশমিক পাঁচ শতাংশ। এখানে বিশেষ আর্কষণ রয়েছে নারীদের জন্য। কোনো নারী গ্রাহক নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ পরিশোধ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হয় এক শতাংশ প্রণোদনা বোনাস। এছাড়া যেসব ব্যাংক শতভাগ অর্থ আদায় করছে, তাদেরও এক শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।
তবে এ সুবিধা নারী উদ্যোক্তা ছাড়া অন্য কোনো তহবিলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতেও কোনো প্রণোদনা প্রযোজ্য নয়।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ এ তহবিলে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ আর্কষণ হলো, তারা নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ পরিশোধে প্রণোদনা বোনাস পাচ্ছেন। মূলত পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতেই এ উদ্যোগ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ তহবিলে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে সফলতার হার যে কোনো তহবিলের সুবিধাভোগীদের চেয়ে বেশি।
Advertisement
আরও পড়ুন
নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিবি রাসেল লিঙ্গ সমতা শক্তিশালী গণতন্ত্রের অপরিহার্য পূর্বশর্ত: স্পিকারএর আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ তহবিল থেকে নারী ও পুরুষ উভয় উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে পারতেন। প্রকল্পে নারী-পুরুষ উভয়ের ঋণের স্থিতির পরিমাণ ৮ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। যেখানে মোট গ্রাহকের সংখ্যা ৬১ হাজার ১৬২ জন ছিল।
তবে পরবর্তী সময়ে এটিকে শুধু নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত ‘স্মল এন্টারপ্রাইজ খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ এর নাম পরিবর্তন করে করা হয় ‘নারী উদ্যোক্তাদের জন্য স্মল এন্টারপ্রাইজ খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’। এখন পর্যন্ত তহবিল থেকে ৪৮ হাজার ৪৩৬ জন নারী উদ্যোক্তাকে অর্থায়ন করা হয়েছে ৭ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা।
এ তহবিল থেকে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের নারী উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে পারেন। আর প্রণোদনায় নিয়মিত ঋণ, বিনিয়োগের পরিমাণ ও ব্যবহারের সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়।
Advertisement
আরও পড়ুন
বদলাচ্ছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম সংরক্ষিত নারী আসনেও ব্যবসায়ীদের আধিক্যনিয়ম অনুযায়ী, এ স্কিমে ঋণ সম্পূর্ণ সমন্বয় বা আদায় হওয়া সাপেক্ষে ঋণের বিপরীতে ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রণোদনা দাবি করতে পারে। প্রতি তিন মাস শেষ হওয়ার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ঋণ নির্ধারিত মেয়াদে সমন্বয় হলে বিপরীতে প্রণোদনার জন্য আবেদন করতে হয়। প্রণোদনার অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়ার পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নারী উদ্যোক্তার ব্যাংক হিসাবে দিতে হয়। তবে এ অর্থ দিয়ে কোনো ঋণ হিসাব সমন্বয় করা যায় না।
পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় প্রদত্ত ঋণের মেয়াদই গ্যারান্টির মেয়াদ। নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে ঋণ সম্পূর্ণ আদায় হলে সংশ্লিষ্ট ঋণের গ্যারান্টির মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে শেষ হয়।
ইএআর/এমএইচআর/জিকেএস