ধর্ম

ক্ষমা ও অনুগ্রহ পাওয়ার দোয়া

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ক্ষমা ও রহমত লাভের অনেক দোয়া নাজিল করেছেন। দোয়ার এসব আয়াতগুলো নাজিলের পেছনে ছিল অনেক কারণ ও নিদর্শন। যা মুমিন মুসলমানের জন্য অনুকরণীয় ও সুমহান শিক্ষা।

Advertisement

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম নিজ ভাই হারুন আলাইহিস সালামের ওপর একটি ঘটনার কারণে প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলন। যখন তাঁর রাগ কমে আসে তখন তিনি আল্লাহর কাছে নিজের জন্য এবং তাঁর ভাইয়ের জন্য এ দোয়া করেছিলেন।

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য হজরত মুসা আলাইহিস সালামের ক্ষমা ও রহমত লাভের সেই দোয়াটি এভাবে তুলে ধরেছেন-رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلأَخِي وَأَدْخِلْنَا فِي رَحْمَتِكَ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَউচ্চারণ : 'রাব্বিগফিরলি ওয়া লিআখি ওয়া আদখিলনা ফি রাহমাতিকা ওয়া আংতা আরহামুর রাহিমিন।'অর্থ : 'হে আমার প্রতিপালক! ক্ষমা কর আমাকে আর আমার ভাইকে এবং আমাদের উভয়কে তোমার রহমতের অন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যে সর্বাধিক করুণাময়। (সুরা আরাফ : আয়াত ১৫১)

উল্লেখ্য হজরত মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে ৩০ দিন ও ৩০ রাত ধ্যানমগ্নের জন্য তুর পাহাড়ে গিয়েছিলেন। সে সময়ের জন্য নিজ ভাই হজরত হারুন আলাইহিস সালামকে কাওমের দেখা শোনার দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন।

Advertisement

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ৩০ দিন ৩০ রাত ধ্যানমগ্ন থাকার কথা থাকলেও আল্লাহ তাআলা তা ১০ দিন বাড়িয়ে দেন। যার ফলে বনি ইসরাইল জাতি এ সময় গো-বাছুর পুজায় লিপ্ত হয়। আর তাতে হজরত হারুন আলাইহিস সালাম বাধা প্রদান/নিষেধ করলে, পুরো কাওম তার ওপর রেগে যান এবং তাকে হত্যা করতে উদ্যত হন।

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তুর পাহাড়ে থাকতেই ওহির মাধ্যমে গো-বাছুর পুজার কথা আল্লাহর কাছে জানতে পারেন। কিন্তু আল্লাহর কাছে শোনার পর তা বাস্তবে এসে দেখায় তিনি রাগ সামলাতে পারেননি।

নিজ ভাই হারুন আলাইহিস সালামকে তিনি দোষারোপ করেন এবং তার মাথার চুল ধরে টেনে নিজের দিকে নিয়ে আসেন। তখন হজরত হারুন আলাইহিস সালাম নিজ ভাইকে বললেন-ভাই! এ কাজে আমার কোনো দোষ নেই। সম্প্রদায়ের লোকেরা আমার কথার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। আমি তাদের নিষেধ করেছিলাম। বরং তারা আমাকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছে।

কাজেই আমার সঙ্গে এমন কোনো ব্যবহার করবেন না, যাতে আমার ও আপনার শত্রুরা খুশি হয়ে যায়। আর আমাকে তাদের এ ভ্রষ্টতার মধ্যে শামিল আছি বলে ভাববেন না।

Advertisement

ভাইয়ের মুখে এ কথা শুনে তখন হজরত মুসা আলাইহিস সালামের রাগ কমে যায়। আর মুসা আলাইহিস সালাম তখন নিজের জন্য, নিজ ভাইয়ের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভের দোয়া করেন।

এ দোয়াটি মহান আল্লাহর এত অধিক পছন্দ হয়ে যায় যে, আল্লাহ তাআলা তা উম্মতে মুহাম্মাদির ক্ষমা ও রহমত লাভের জন্য তুলে ধরেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হজরত মুসা আলাইহিস সালামের ক্ষমা ও রহমত লাভের দোয়ার মাধ্যমে নিজেদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও অনুগ্রহ কামনা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত দোয়ার মাধ্যমে তার ক্ষমা ও রহমত লাভের তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার সব ভ্রষ্টতা থেকে মুক্তি দিন। আমিন।

এমএমএস/এমকেএইচ