লাইফস্টাইল

অলিভ অয়েলে দূর হবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি, বলছে গবেষণা

অলিভ অয়েলের ব্যবহার হৃদরোগের জন্য উপকারী। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রায় এক লক্ষ লোকের স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করে এমনটাই দেখতে পেয়েছেন। বিশেষ করে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল আপনার শরীরের পক্ষে বেশি ভালো। এতে ওলিক অ্যাসিড নামে একটি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা প্রদাহ হ্রাস করে।

Advertisement

যুক্তরাজ্যে প্রায় ২৭ শতাংশ মৃত্যু ঘটে হার্টের অসুখের কারণে। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন অনুযায়ী, এর সংখ্যা প্রতি বছর প্রায় এক লক্ষ সত্তর হাজার এবং প্রতিদিন গড়ে ৪৬০ জন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে সমস্ত মৃত্যুর এক চতুর্থাংশ হয় হৃদরোগ থেকে। যার সংখ্যা প্রায় ছয় লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার।

গবেষণার শীর্ষস্থানীয় লেখক ডাঃ মার্তা গুয়াশ-ফেয়ার বলছেন- ‘পূর্ববর্তী গবেষণাগুলোতেও এটি দেখা গেছে যে, অলিভ অয়েলের ব্যবহার হৃদরোগ দূরে রাখতে বেশ কার্যকরী, বিশেষত ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে যেখানে আমেরিকার তুলনায় অলিভ অয়েলে পরিমাণ অনেক বেশি। আমাদের লক্ষ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অলিভ অয়েল হৃদরোগের জন্য উপকারী কিনা সে বিষয়ে জানা।

Advertisement

গবেষণাটি বোস্টনের হার্ভার্ড টি.এইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ- এ করা হয়। এর সময়কাল ছিল ১৯৯০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। এর মধ্যে নার্সদের হেলথ স্ট্যাডি থেকে ৬৩,৮৬৭ জন নারী এবং হেলথ প্রফেশনালদের ফলো-আপ স্টাডি থেকে ৩৫,৫১২ জন পুরুষ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

গবেষণার শুরুর দিকে সমস্ত অংশগ্রহণকারী ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগমুক্ত ছিল।

প্রায় তিন দশক ধরে প্রতি চার বছরে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের ডায়েট এবং জীবনধারা সম্পর্কে প্রশ্নাবলীর উত্তর দেন।

গবেষকরা অলিভ অয়েলের কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য সুবিধার সাথে অন্যান্য উদ্ভিদের তেলের সংমিশ্রণ যেমন কর্ন, ক্যানোলা, কুসুম এবং সয়াবিনের তুলনা করেও দেখেছেন। কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (সিভিডি) হৃৎপিণ্ড বা রক্তনালীগুলোকে প্রভাবিত করে এমন অবস্থার জন্য একটি সাধারণ শব্দ।

Advertisement

ডায়েট এবং লাইফস্টাইলের বিষয়গুলোর জন্য হিসাব করে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন যে, যারা অলিভ অয়েল প্রতিদিন আধা চামচের বেশি খেয়েছেন তাদের মধ্যে কোনোরকম কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকি ১৫ শতাংশ কম ছিল। তাদের করোনারি হার্ট ডিজিজের ২১ শতাংশ কম ঝুঁকি ছিল।

আমাদের গবেষণার আকর্ষণীয় বিষয় এটি যে, অলিভ অয়েল বেশিরভাগ প্রাণীর চর্বি এবং মার্জারিনের চেয়ে ভালো ছিল। এর অর্থ হলো অলিভ অয়েলসহ অন্যান্য উদ্ভিজ্জ তেলের সাথে কোনো ধরণের প্রাণীর চর্বি প্রতিস্থাপন করা কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য একটি ভালো কৌশল হতে পারে- বলছিলেন ডাঃ গুয়াশ-ফেয়ার।

গবেষকরা আরও জানতে পেরেছেন যে এক চা চামচ মাখন, মার্জারিন, মেয়োনেজ বা দুগ্ধযুক্ত ফ্যাট একই পরিমাণে অলিভ অয়েলের সাথে মিশিয়ে খেলে তা হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতে পারে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ সারা ব্রেভার এবং ডায়েটিশিয়ান জুলিয়েট কেলো তাদের ‘ইট বেটার লাইভ লংগার’ বইটিতে দাবি করেছেন যে অলিভ অয়েল আপনার জীবনযাপন সুস্থ ও দীর্ঘ করতে পারে। তারা বলেছে যে সাধারণ রান্নার উপাদানটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সারের বৃদ্ধি রোধ করতে বা কমিয়ে দিতে এবং হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে।

অলিভ অয়েল কোলেস্টেরল, রক্তচাপ এবং বয়সজনিত রোগের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলো হ্রাস করে। পাশাপাশি মস্তিষ্কের কাজকে উন্নত করতে পারেও বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

এইচএন/পিআর