দেশজুড়ে

গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন

পাবনার সুজানগরে সজি খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। দুই সন্তানের জননী ওই গৃহবধূকে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়েছে। আগুনে তার শরীরের ৬০ ভাগ পুড়ে গেছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভোরে পাবনার সুজানগর উপজেলার আমিনপুর থানার তালিমনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পারিবারিক কলহের জের ধরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে গৃহবধূর স্বজনরা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ওই গৃহবধূর ননদ সামেলা খাতুনকে (৩৭) আটক করেছে।

অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ সজি খাতুন সুজানগর উপজেলার আমিনপুর থানার মুরারীপুর গ্রামের দারিদ্র ভ্যান চালক ফজিবর মন্ডলের মেয়ে।

ফজিবর মন্ডল জানান, ১২ বছর আগে একই থানার তালিমনগর গ্রামের গেদা মন্ডলের ছেলে সুরমান আলীর (৩০) সঙ্গে তার মেয়ে সজি খাতুনকে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছিল সজির স্বামী, শাশুড়ি, ননদসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এরই মধ্যে বছর খানেক আগে সুরমান আলী কাজের সন্ধানে মালয়েশিয়া যান। মালয়েশিয়া থেকে তিনি টাকা পাঠাতেন তার বোন (সজির ননদ) সামেলার নামে। সামেলা সুরমানের পাঠানো টাকা থেকে প্রতিমাসে আড়াই থেকে ৩ হাজার করে টাকা দিত সজিকে। এই টাকা দিয়ে সজি ৬ বছর এবং ৪ বছর বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে চলতো। কিন্ত এ টাকায় তার সংসার চলতো না। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ তীব্র হতে থাকে।

Advertisement

দুই মাস আগে সজিকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় শাশুড়ি-ননদ, ভাসুরসহ পরিবারের লোকজন। এ ব্যাপারে আমিনপুর থানায় অভিযোগ দেয়া হলে পুলিশ বুধবার সজিকে দুই সন্তানসহ বাড়িতে তুলে দিয়ে যায়। এরপর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সজিকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। এ সময় দুই সন্তান ও সজির আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে।পরে পুলিশ ও স্বজনরা এসে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্ত পাবনা জেনারেল হাসাপাতাল থেকে তাকে দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. আনন জানান, সজির শরীরের ৬০ ভাগ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আমিনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম জানান, পারবারিক কলহের জের ধরেই শশুরবাড়ির লোকজন গৃহবধূ সজির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ সজির ননদ সামেলা খাতুনকে আটক করেছে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

একে জামান/আরএআর/এমকেএইচ