আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টারনেট গ্রাস করছে তরুণ প্রজন্মকে। এর প্রভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা। তরুণ প্রজন্মের কাছে এখন যেন তা রূপকথার গল্প। আগামী প্রজন্মের কাছে হারিয়ে যেতে বসা এসব খেলার পরিচয় করিয়ে দিতে মেহেরপুর যাদুখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে গ্রামবাসীর উদ্যোগে আয়োজন করা হয় গ্রামীণ খেলাধুলার। শুক্রবার বিকেলে খেলায় অংশ নিয়ে অনেকেই ফিরে গেছেন শৈশবে।
Advertisement
খেলা দেখতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ছেলেবেলার স্কিপিং বা দড়ি লাফ খেলার কথা মনে আছে। আমরা যারা গ্রামে বড় হয়েছি, তারা না বুঝেই দড়ি লাফাতাম। খেলাটি সচরাচর এখন আর চোখে মেলে না। আকাশ সংস্কৃতি আর ইন্টারনেটের প্রভাবে তরুণ প্রজন্ম আজ ভুলতে বসেছে খেলাটি। খেলাটি দেখে আমি খুব আনন্দিত।’
> আরও পড়ুন- উপস্থাপনার জন্য প্রস্তুত উপকূলের শিক্ষার্থীরা
মেহেরপুর যাদুখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে শুধু স্কিপিং নয় মাঠজুড়ে চলেছে স্লো সাইকেল রেস, শাকের গুটি, লাটিম, মার্বেল, দড়ি টানাটানি, মোরগ লড়াইসহ বাংলার হারিয়ে যাওয়া সব খেলাধুলা। তরুণ ও কিশোররা রং-বেরঙের ঘুড়ি নিয়ে হাজির হয় মাঠে। বৃদ্ধরা মেতেছেন বালিশ খেলায়। বয়স বাড়লে কী হবে? অনেক বছর পর খেলায় অংশ নেওয়াটাই যেন মুখ্য তাদের কাছে। তরুণরাও তাদের সাথে খেলতে পেরে খুশি। মাঠজুড়ে যেন শিশু, কিশোর, তরুণ ও বৃদ্ধদের মিলনমেলা।
Advertisement
কাঠালপোতা গ্রামের সুমন আলী, রজব আলী, সাইফুল ইসলাম ও মিয়ারুল খেলা দেখতে এসে জানান, ঐতিহ্যবাহী এসব খেলা দেখতে পেরে তারা খুশি। মাঠে বসে খেলাগুলো উপভোগ করে অনেকেই যেন ফিরে গিয়েছিলেন তাদের অতীত স্মৃতিতে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো হারিয়ে যাওয়ায় এখন হতাশ তারা। তাই এমন খেলা বারবার আয়োজনের দাবি তাদের।
> আরও পড়ুন- একটি পিঠা পার্ক পূরণ করছে তরুণদের স্বপ্ন
খেলায় অংশ নেওয়া সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঞ্জুমান ও সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘খেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা খুব খুশি ও আনন্দিত। শিশুদের মাঠমুখী করতে ও হারানো খেলাধুলা ধরে রাখতে প্রতি বছর এমন আয়োজনের দাবি জানাই।’
আয়োজক কমিটির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম জানান, আধুনিকতার ভিড়ে আজ তরুণরাও গা ভাসিয়েছে। তাদেরকে মাঠমুখী করতে ও হারানো খেলাধুলার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এমন আয়োজন।
Advertisement
আসিফ ইকবাল/এসইউ/আরআইপি