নওগাঁয় আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের জেলা প্রশাসনের এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সরকারি বাসভবনে চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা কয়েকদিন আগের হলেও বিষয়টি জানাজানি হয় মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে।
Advertisement
আব্দুল্লাহ আল মামুন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত, ট্রেজারি ও গোপনীয় শাখায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি)।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, ম্যাজিস্ট্রেটের বাসা থেকে খোয়া গেছে অন্তত তিন লাখ টাকা। টানা তিন দিন সরকারি কাজে ঢাকায় থাকার পর মঙ্গলবার সকালে সরকারি বাসভবনে ফিরে চুরির বিষয়টি বুঝতে পারেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ ঘটনা জানার পরপরই বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিআইডি ও থানা পুলিশের সদস্যরা।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলছে, চুরি হওয়া টাকার উৎস নিশ্চিত করতে না পারায় এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ ৪০তম বিসিএসের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনও।
Advertisement
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে যাওয়ার পর এনডিসির ফ্ল্যাটের দরজার তালা এবং ভেতরের একটি আলমারির তালা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। এনডিসির ভাষ্যমতে, ওই ড্রয়ারে প্রায় তিন লাখ টাকা ছিল। তবে ওই টাকা কীসের সেটি আমাদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় মামলা করেননি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বরে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় কথা বলেন এ প্রতিবেদক। চুরি যাওয়া টাকা কোন খাতের জানতে চাইলে তিনি বলেন, চুরি কবে কখন কীভাবে ঘটেছে আমার জানা নেই। যেহেতু পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে, আপাতত কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। সামনাসামনি দেখা হলে কথা বলার অনুরোধ করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন সরকারি দিবস উদযাপনের যাবতীয় খরচের দায়িত্বে থাকেন এনডিসি। জেলা প্রশাসকের স্বেচ্ছাধীন তহবিল (এলআর ফান্ড) থেকে এই টাকা খরচ করেন তিনি। মূলত এই দায়িত্বে যারাই থাকেন, তাদের কাছে নগদ টাকা রাখেন জেলা প্রশাসক। এই তহবিল সরকারিভাবে নিরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় থানায় মামলা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁর জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল জাগো নিউজকে বলেন, এনডিসির স্ত্রী একজন চিকিৎসক। মাঝে মধ্যেই ওই বাসায় এসে থাকেন। বাসায় তাদের ব্যক্তিগত তিন লাখ টাকা থাকতেই পারে। ওই টাকাকে বিশাল অংকের দেখিয়ে সরকারি টাকা কি-না, এমন প্রশ্ন করা ঠিক নয়। সরকারি চাকরিজীবীরা ফকির নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
Advertisement
আরমান হোসেন রুমন/এসআর/জেডএইচ/