জাতীয়

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে : র‌্যাব মহাপরিচালক

পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে পিসফুল (শান্তিপূর্ণ)। ভোটাররা সবাই শান্তিপূর্ণ ও স্বাচ্ছন্দে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এবং নতুন সরকার গঠন করবেন।

Advertisement

শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বেনজীর আহমেদ বলেন, এক সপ্তাহ পরই জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন এবং সরকার গঠন করবেন। নির্বাচনে অতীতের মতো সাংবাদিক ও আমরা এক সাথে কাজ করবো।

তিনি বলেন, অপরাধ কমলেও নতুন নতুন অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে। এই বিষয়টি ক্রাইম রিপোর্টাররা তুলে আনতে পারেন। ফিন্যান্সিয়াল ও সাইবার ক্রাইম বাড়ছে। মিথ্যে কথা ও প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে। যদিও মিথ্যে বলে আমরা সেটা পাত্তা দিই না।

Advertisement

তিনি বলেন, অস্বস্তিকর, বিরক্তিকর প্রোপাগান্ডা ছড়ানোকারীরা বিকারগ্রস্ত। আমাদের বিশ্বাস, গুরুত্ব একই রকম। শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক মানুষের ওই প্রোপাগান্ডা ছড়ানোয় জড়িতরা নিজেদের অসহায়ত্ব ও কুরুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে।

র‌্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, ফিনান্সিয়াল ক্রাইমের ক্ষেত্রে অনেক অপরাধ হচ্ছে যা সাদা চোখে দেখা যায় না। আর্থিক খাতে প্রতারণা হচ্ছে। দেওয়ানী প্রকৃতির এসব অপরাধের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ কিছু করার থাকে না। আর এসব মামলার বিচার কাজে খুবই সময় লাগে। একটা মামলার বিচার সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৯ মাস হলো স্ট্যান্ডার্ড। এই সময়ের মধ্যেই বিচার কাজ হওয়া উচিৎ। জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটদের সংখ্যা ও সুযোগ-সুবিধা যেন বাড়ে সেজন্য গণমাধ্যমের ভাইয়েরা কাজ করতে পারেন।

অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদকদের নিজেদের সহকর্মী ও বন্ধু উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পরিবর্তনের ছোঁয়া চারদিকে। ২০ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশ এক নয়। অনেক পরিবর্তন এসেছে। মিডিয়া জগতে দাপট ক্রাইম রিপোর্টারদের বেশি। মিডিয়ার প্রাণ বলা যায় ক্রাইম রিপোর্টাদের। দারিদ্র্যের সাথে অপরাধের সম্পর্ক রয়েছে। দারিদ্র্য কমায় অপরাধও কমেছে দেশে।

সাবেক এ ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২০১০ সালে ডিএমপি কমিশনার হয়ে বসার পরই মিডিয়া সেন্টারে হাত দিয়েছি। সেখানে মানসম্মত বসার জায়গা, কম্পিউটার, ফ্রি ইন্টারনেট দিয়েছি। আগে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে সাংবাদিকদের ছিল ব্যক্তিগত সম্পর্ক। সেটা ভেঙে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়ার কাজ শুরু করে দিয়েছি। ডিএমপি কমিশনারের পদ ছেড়ে র‌্যাবে আসার পর দেখেছি উত্তরা র‌্যাব সদর দফতর আসতে যেতে ও নিউজ কাভার করতে সাংবাদিকদের দিনই শেষ হয়ে যায়। তাদের কাছে দ্রুত পৌঁছাতে ও দ্রুত তথ্য সরবরাহের লক্ষ্যে আমরা র‌্যাব মিডিয়া সেন্টার মিডিয়া পাড়া কারওয়ানবাজারে নিয়ে এসেছি। আমার দরকার সাংবাদিকদের, সাংবাদিকদেরও দরকার আমাদের। সেটা সামনে আরও উন্নতি হবে। সামনের দিনগুলো আরও চ্যালেঞ্জিং হবে। সেখানে আমাদের উভয়পক্ষকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

Advertisement

অনুষ্ঠানে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (মিডিয়া) এসএম রুহুল আমিন বলেন, আমরা অপরাধ দমন করি আর আপনারা রিপোর্টাররা তথ্যচিত্র তুলে ধরেন। সেখানে আমাদের সাথে সাংবাদিকদের বিরোধের কোনো সুযোগ নেই। যখন নিজের কাজটা করি না, তখন বিরোধ হতে পারে। আবার নিজের কাজটা ঠিক করলেও যখন পেঁচিয়ে প্রতিবেদন হয়, তখনও হতে পারে। সেটা উভয়পক্ষেরই হতে পারে। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বশীলতার সাথে নিজের কাজটা করলে দেশ এগিয়ে যাবে।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি সোহেল রানা বলেন, জাতি গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সব ধরনের সহযোগীতা ছিল, তা সামনের দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে।

সমাপনী বক্তব্য রাখেন ক্র্যাবের সভাপতি আবু সালেহ আকন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, ক্র‌্যাবের সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার আলম।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মো. আলমগীর হোসেন, র‌্যাবের এডিজি (অপস) কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম ও এডিজি অ্যাডমিন ডিআইজি জামিল আহমেদ।

জেইউ/এনএফ/পিআর