দেশজুড়ে

পাটের ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় সোনালি আঁশ খ্যাত পাটের সে সুদিন এখন আর নেই। ফলে মেহেরপুরে দিন দিন পাটের আবাদ কমছে। গেল কয়েক বছর জেলার কৃষকদের পাট চাষ করে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি বছর পাটের ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজার দরেও কৃষকরা খুশি। এরপরেও তারা পাটের বাজার স্থিতিশীল চান।

Advertisement

এদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দাবি বড় বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাটের দাম কমিয়ে ফেলছে। আর জুট মিলের পাট সরবরাহকারীদের দাবি মিলগুলোর চাহিদার ওপর নির্ভর করে পাটের মূল্য। এতে সিন্ডিকেটের কিছু নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেব মতে, জেলায় গেল বছর প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। যা কমে চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এতে করে ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার ১০৯ বেল পাট উৎপাদন হবে। তবে এ বছর পাটের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি চাষিরা। আর পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকেরা সহজেই পাট জাগ দিতে পারছেন। ফলে পাটের মানও ভালো হচ্ছে।

সদর উপজেলার আলমপুর গ্রামের পাট চাষি আহসান হাবিব জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকায়। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় পাট জাগে সমস্যা হচ্ছে না।

Advertisement

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল বলেন, বাজারে পাটের চাহিদা থাকায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কাঁচা পাট কিনছেন। বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে আমরাও পাট ক্রয় করে লাভবান হচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বড় বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাটের দাম কমিয়ে দিলে চাষিদের পাশাপাশি আমরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই বড় ব্যবসায়ীরা যাতে কোনোভাবেই সিন্ডিকেট করে পাটের দাম কমাতে না পারে সেদিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নজর দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে জুট মিলে পাট সরবরাহকারী তানজিলুর রহমান জানান, পাটের মূল্য নিয়ে সিন্ডিকেট করার কোনো সুযোগ নেই। গতানুগতিক পদ্ধতি কাঁদা মাটি দিয়ে পাট জাগ দেয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ পাটের ভালো দাম পান না।

মেহেরপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান জানান, কাদা-মাটি বা কলা গাছ ব্যবহার নয়। পলিথিন, কংক্রিট, ইট ব্যবহার করে পাট জাগ দেয়া অথবা রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। এতে পাটের গুণগত মান ভালো হবে। কৃষকেরা ন্যায্য মূল্যও পাবেন।

Advertisement

আসিফ ইকবাল/আরএ/পিআর