হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া পরিশোধে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করেছে বেসরকারি ৮৩৫ হজ এজেন্সি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মোট ৮৩৭টি এজেন্সির মধ্যে মাত্র দুটি ছাড়া অন্য এজেন্সিগুলো বিমান ভাড়ার টাকা ব্যাংক একাউন্টে জমা দেয়নি।জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয় ২ জুন হজ এজেন্সিজ অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি ও মহাসচিবকে দেয়া এক চিঠিতে প্রত্যেক হজ এজেন্সিকে হাজিদের বিমান ভাড়ার সম্পূর্ণ টাকা ১০ জুনের মধ্যে সরকারের নির্ধারিত ব্যাংক একাউন্টে জমা দেয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুটি এজেন্সি-আল বাসিতু ৫০ যাত্রীর ও ইউনাইটেড মক্কা মদিনা ১০০ যাত্রীর বিমান ভাড়া পরিশোধ করেছে। চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ৭৫৮ জনসহ মোট ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাওয়ার কথা রয়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২২ সেপ্টেম্বর হজ হওয়ার কথা রয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন হজ মৌসুমে হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ধর্মসচিব ড. চৌধুরী মো. বাবুল হাসান শনিবার বিকেল ৪টায় আশকোনা হাজীক্যাম্পে সব হজ এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারি/পরিচালক/ব্যবস্থাপনা পরিচালক/অংশীদারদের সঙ্গে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ওরিয়েন্টেশন ও বিমান ভাড়া পরিশোধ বিষয়ে সভা করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমান ভাড়া পরিশোধ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে হজ এজেন্সিজ অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি ইব্রাহিম বাহার জাগো নিউজকে বলেন, এ কথা সত্যি যে বিভিন্ন হজ এজেন্সি সৌদি আরবে অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকায় নির্ধারিত সময়ে বিমান ভাড়া পরিশোধ করতে পারেনি। তিনি বলেন, সরকারের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা রাখার বদলে তারা প্রত্যেক এজেন্সির নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রীর বিপরীতে বিমান ভাড়ার টাকা পে অর্ডার জমা রাখার জন্য ধর্ম সচিবকে অনুরোধ জানাবেন। এ পদ্ধতিতে কোনো এজেন্সি প্রতারণা করে হজ যাত্রীদের বিপাকে ফেলে পালিয়ে যেতে পারবেনা বলে তিনি দাবি করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, গত বছর বিভিন্ন এজেন্সি তাদের ৪ শতাধিক হাজির বিমান ভাড়া পরিশোধ না করে সৌদি আরব পালিয়ে যায়। ওই সময়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সৌদি আরবে অবস্থান করছিলেন। এদিকে প্রতারণার শিকার যাত্রীরা সংবাদ সম্মেলন করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তাদের হজে পাঠানোর জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।ওই সময় জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। তিনি সরকারি টাকায় টিকেট কিনে চার শতাধিক যাত্রীকে হজে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে কোনো হজ এজেন্সি যেন হাজিদের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা করতে না পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। চলতি বছরে যেন অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় আগাম বিমান ভাড়া পরিশোধের নির্দেশনা জারি করে। এমইউ/এসকেডি/এআরএস/এমএস
Advertisement