জাতীয়

মহাখালীতে স্থাপিত হচ্ছে ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টার

রাজধানীর মহাখালীতে ‘ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টার’ স্থাপিত হচ্ছে। প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হবে এ সেন্টার। সেন্টারটি স্থাপিত হলে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও রক্তের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে দেশের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠিকে প্রাণঘাতী রক্তবাহিত রোগ এইডস্, হেপাটাইটিস-বি ও হেপাটাইটিস-সিসহ অন্যান্য রোগ থেকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।শুধু তাই নয়, এছাড়া সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত তিন শতাধিক ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টারের উপর মনিটরিং ও সুপারভিশন বৃদ্ধিসহ নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রম পরিচালনা অধিকতর সহজ হবে।জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ কমিটির মহাসচিব ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আসাদুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টার স্থাপনের জন্য ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।সরকারিভাবে মহাখালী বিএমআরসি ভবনের পাশে তিন বিঘা জমিও বরাদ্দ পাওয়া গেছে। জমি বুঝে পেলে সেন্টার নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।১৪ জুন রোববার বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান, নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে ব্যাপক গণসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হবে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘জীবন রক্ষার জন্য ধন্যবাদ।’বিশ্বে প্রতি বছর ১০৭ কোটি ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় এদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানের হার এখনো কম। বর্তমানে দেশে প্রতি বছর কমবেশি ৯ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য বুলেটিন-২০১৪ এর তথ্যানুসারে ২০১৩ সালে সরকারিভাবে পরিচালিত ২০৮টি নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন থেকে পাওয়া গেছে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৪ ব্যাগ রক্ত। তন্মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার কাছ থেকে পাওয়া গেছে মাত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮৪ ব্যাগ রক্ত। অবশিষ্ট ৪ লাখ ১৭ হাজার ৭৯০ ব্যাগ রক্ত আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে প্রাপ্ত।তবে গত ১৪ বছরে দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা কাঙ্খিত পর্যায়ে না পৌঁছালেও পরিমাণে বেড়েছে।

Advertisement

প্রফেসর আসাদুল ইসলাম জানান, ২০০০ সালের দিকে রক্তের মোট চাহিদার ৭০ ভাগ পেশাদার রক্তদাতার কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হতো। কিন্তু, বর্তমানে শতকরা ৩১ ভাগ স্বেচ্ছায় রক্তদাতা ও অবশিষ্ট ৫৯ ভাগ আত্মীয়স্বজনরা দিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বেচ্ছায় রক্তদানের হার থাইল্যান্ডে শতকরা ১০০ ভাগ, শ্রীলংকাতে শতকরা ৯৬ ভাগ, ভারতে তা শতকরা ৬৫ ভাগ এবং ভারতের পশ্চিম বাংলায় শতকরা ৯৩ ভাগ। বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে শতকরা ১০০ ভাগ স্বেচ্ছা রক্তদানের মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ করা হয়।প্রফেসর আসাদুল ইসলাম আরো বলেন, উন্নত বিশ্বে স্বেচ্ছা রক্তদানের হার প্রতি ১০০০ জনে ৪০ জন আর উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতি ১০০০ জনে ৪ জনেরও কম।দেশের জনগোষ্টির ২ শতাংশ জনগণ বছরে একবার রক্তদান করলে দেশে রক্তের অভাব থাকবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদানের হার শতভাগে উন্নীত করার টার্গেট নেয়া হয়েছে।এমইউ/আরএস

Advertisement