বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন পদ্ধতির গত ৫৩ বছরের দুর্বলতা, দুর্নীতি এবং বৈশ্বিক কাঠামোর অন্তরালের গোপন খতিয়ান উন্মোচন করেছেন রাশেদ কাঞ্চন। সম্প্রতি এ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তার নতুন বই ‘ফাইভ সি : দুর্নীতি, ষড়যন্ত্র, পুঁজিবাদ, বৈপরীত্য এবং সহযোগিতা’।
Advertisement
‘ফাইভ সি’ মূলত বাজেট ব্যবস্থাপনায় পাঁচটি কাঠামোগত সংকটকে কেন্দ্র করে লেখা। এগুলো হচ্ছে দুর্নীতি বা করাপশন, ষড়যন্ত্র বা কনসপিরেসি, পুঁজিবাদ বা ক্যাপিটালিজম, বৈপরীত্য বা কনট্রাডিকশন ও সহযোগিতা বা কপারেশন। লেখক রাশেদ কাঞ্চনের মতে, ‘এই পাঁচ “সি” গত পাঁচ দশক ধরে বাজেট ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সংকটে ঠেলে দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে উত্তরণের প্রস্তাব তিনি তুলে ধরেছেন বইটিতে।
‘ফাইভ সি’ কেবল জাতীয় বাজেট বিশ্লেষণেই সীমাবদ্ধ নয়। এতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার নির্ভরশীল কাঠামোর গভীর বিশ্লেষণ করা হয়েছে। লেখক দৃঢ়ভাবে দেখিয়েছেন কীভাবে দুর্নীতি ও বৈদেশিক নির্ভরতা জাতীয় উন্নয়নের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বইটি উন্নয়নের প্রচলিত ব্যাখ্যা নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে। এ বইয়ের সহসম্পাদক ছিলেন ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেরি উইলিয়াম, যার মাধ্যমে বইটিতে আন্তর্জাতিক একাডেমিক মানদণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ ঘটেছে।
রাশেদ কাঞ্চন একজন সাংবাদিক। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধ এবং ২০০১ সালে সিয়েরা লিওনের গৃহযুদ্ধ থেকে সরাসরি প্রতিবেদন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ঢাকায় কাজ করেছেন এটিএন বাংলা এবং চ্যানেল আইতে। তিনি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রাশেদ কাঞ্চন করপোরেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। এই বইতে তিনি তুলে ধরেছেন স্বাধীনতার পর থেকে কীভাবে বাংলাদেশের করদাতাদের অর্থ, বিদেশি ঋণ ও সাহায্যের অপব্যবহার হয়েছে। বলা যায় বইটি তার ২৫ বছরের নিবিড় গবেষণা, সাংবাদিকতা এবং বাজেট পর্যালোচনার ফল।
Advertisement
‘ফাইভ সি’ নিছক একটি বই নয়, এ যেন এক আহ্বান। গবেষণালব্ধ তথ্য, বিশ্লেষণ এবং সাহসিকতায় নির্মিত এই বই বাজেট ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে। বইটি সাংবাদিকতা, অর্থনীতি এবং নীতিনির্ধারণের প্রতিটি অঙ্গনে নতুন আলো ফেলবে। এটি প্রকাশ করেছে প্যান আমেরিকান পাবলিশার্স ইনকর্পোরেটেড। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বইটি পাওয়া যাবে নিউইয়র্ক, লন্ডন, প্যারিস, টোকিও, সিঙ্গাপুর, দুবাই এবং ঢাকাসহ বিশ্বের একাধিক শহরে।
আরএমডি