রাজনীতি

বিগত সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে: মঈন খান

বিগত সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে: মঈন খান

বিগত স্বৈরাচারী সরকার ইচ্ছা করেই এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। কেননা তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ভয়ে ছিল, মানুষ শিক্ষিত হলে তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবে। এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীরউত্তম) ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট শামসুজ্জামান দুদু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল প্রমুখ। এছাড়া সেমিনারে ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান উপস্থিত শ্রোতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা একটা প্রশ্ন সবসময় শুনতে পাই যে, বিএনপির জন্ম হয়েছে ক্যান্টনমেন্টে। কিন্তু একজন সৈনিক জিয়াউর রহমান এদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে যা করেছেন, অন্য কেউ কি তা করতে পেরেছে? যারা (আওয়ামী লীগ) নিজেদের জনগণের দল বলে দাবি করে, তারা কেন জনগণকে মূর্খ করে রাখতে চেয়েছিল?

Advertisement

তিনি বলেন, এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে বিগত স্বৈরাচারী সরকার। কেননা মানুষ শিক্ষিত হলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে। শিক্ষা-দীক্ষা আর জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত হওয়ার মাধ্যমেই বিশ্বের শীর্ষে অবস্থান করা যায়, এ বিষয়টি অনুধাবন করে জিয়াউর রহমান শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে জোর দিয়েছিলেন।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, একজন শিক্ষাবান্ধব প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিয়াউর রহমান শিক্ষা ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। তিনি সরাসরি কোনো বিশদ শিক্ষাদর্শন রচনা করেননি। তবে তার শাসনামলে গ্রহণ করা শিক্ষা নীতিমালা, তার বক্তব্য এবং তার শিক্ষা বিষয়ক কর্মসূচি ও কর্মপন্থার মাধ্যমে তার শিক্ষাচিন্তা ও দর্শন স্পষ্ট হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও ভাবনায় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং কারিগরি ও মানবিক শিক্ষাও গুরুত্ব পেয়েছিল। শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেন জাতীয় চেতনা, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল মূল্যবোধকে ধারণ করে, তিনি সেটা প্রত্যাশা করেছিলেন। তিনি মনে করতেন, কেবল মেধা বা ভালো ফলাফল নয়, শিক্ষার্থীর চরিত্র গঠন ও তার মধ্যে মানবীয় মূল্যবোধ তৈরি করা শিক্ষার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কেবল একজন রাষ্ট্রপতিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন রাষ্ট্রনায়ক। তিনি আধুনিক রাষ্ট্র গড়ার রূপকার। আমরা যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলি তার প্রবক্তা ছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি তার জীবদ্দশায় উৎপাদনমুখী এ জীবননির্ভর শিক্ষার প্রতি জোর দেন। তার এ শিক্ষাচিন্তা কতটা বাস্তব ছিল তা আমরা বর্তমান সময়ে এসে টের পাচ্ছি।

Advertisement

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, গত ১৭ বছরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমন ক্রান্তিকালে আমরা প্রত্যাশা করি আগামীর বাংলাদেশ হবে শিক্ষানির্ভর। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছেন সেখানে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

সেমিনারে উপস্থিত হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানান তিনি।

এফএআর/এএমএ/জিকেএস