মুফতি আব্দুল্লাহ আমান
Advertisement
প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মুসলমান আল্লাহর প্রেমে, তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব গমন করেন। হজের সফর মুসলমানের জীবনে অসাধারণ আত্মিক অভিজ্ঞতা এবং আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতার সফর। আল্লাহ তাআলার কাছাকাছি যাওয়া ও তার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির সফর। তাই এই সফরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো সময় আল্লাহ তাআলার স্মরণ, জিকির, দোয়া ও ইবাদতে নিজেকে নিমগ্ন রাখার রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত।এ লেখায় আমরা তুলে ধরেছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া যা হজ পালনকারীদের আত্মিক প্রস্তুতি ও ইবাদতে নিমগ্নতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এসব দোয়া আত্মার গভীর থেকে আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যম হতে পারে ইনশাআল্লাহ।
সফরের শুরুতে মুসলমান ভাইকে বিদায় জানাতে যে দোয়া পড়বেনأَسْتَوْدِعُكُمُ اللهَ الَّذِي لا تَضِيعُ وَدَائِعُه
উচ্চারণ: আস্তাওদিউ’কুমুল্লা হাল্লাযী লা তাদীউ ওয়া দাই'উহু।
Advertisement
অর্থ: আমি তোমাদের এমন এক আল্লাহর হেফাজতে দিচ্ছি, যার হেফাজতে রাখা কিছুই নষ্ট হয় না বা হারায় না।
হজের সফর শুরু করার পর এই দোয়া পড়ুনاللّٰهُ أَكْبَرُ، اللّٰهُ أَكْبَرُ، اللّٰهُ أَكْبَرُ، سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ وَإِنَّا إِلَىٰ رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ، اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ فِي سَفَرِنَا هٰذَا الْبِرَّ وَالتَّقْوَىٰ، وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضَىٰ، اللَّهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هٰذَا وَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهُ، اللَّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ، وَالْخَلِيفَةُ فِي الْأَهْلِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ، وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ، وَسُوءِ الْمُنْقَلَبِ فِي الْمَالِ وَالْأَهْلِ وَالْوَلَدِ.
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, সুব্হানাল্লাযী সাখ্খারা লানাহা-যা, ওয়া মা কুন্না লাহু মুক্রিনীন ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুন্কালিবূন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফী সাফারিনা হাযাল- বিররা ওয়াত্-তাকওয়া, ওয়া মিনাল-‘আমালি মা তারদা। আল্লাহুম্মা হাও্উইন ‘আলাইনা সাফারানা হা-যা, ওয়াত্বি ‘আন্না বু‘দাহু। আল্লাহুম্মা আনতাস্-সাহিবু ফিস্-সাফারি, ওয়াল-খালীফাতু ফিল আহলি। আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিন্ ওয়া‘সা-ইস্সাফারি, ওয়া কা-আবাতিল মানযারি, ওয়া সু-ইল মুন্কালাবি ফিল মা-লি, ওয়াল আহলি ওয়াল ওয়ালাদ।
অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। পবিত্র মহান সত্তা তিনি, যিনি আমাদের জন্য এ বাহনকে অনুগত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা একে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম ছিলাম না। নিশ্চয়ই আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছেই প্রত্যাবর্তনকারী। হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে আমাদের এই সফরে সৎকর্ম ও পরহেজগারিতা এবং এমন কাজের তাওফিক চাই, যা আপনি পছন্দ করেন। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য এই সফরকে সহজ করে দিন এবং এর দূরত্বকে আমাদের নিকটবর্তী করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি সফরের সাথী এবং পরিবারে তাদের তত্ত্বাবধায়ক। হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই সফরের কষ্ট, দৃশ্যের বিষণ্নতা এবং ধ্বংসাত্মক ফিরে আসা থেকে—সে হোক সম্পদে, পরিবারে বা সন্তানদের ক্ষেত্রে।
Advertisement
لَبَّيْكَ اللّٰهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لَا شَرِيكَ لَكَ.
উচ্চারণ: লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা, লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি হাজির। আপনার কোন শরিক নেই, আমি হাজির। নিশ্চয় সকল প্রশংসা, অনুগ্রহ ও রাজত্ব আপনারই। আপনার কোনো শরিক নেই।
হারামে প্রবেশের সময় যে দোয়া পড়বেনأَعُوذُ بِاللّٰهِ الْعَظِيمِ، وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ، وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ، بِسْمِ اللّٰهِ، وَالْـحَمْدُ لِلّٰهِ، وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللّٰهِ، اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي، وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ.
উচ্চারণ: আউযু বিল্লা-হিল আজীম, ওয়াবি-ওয়াজহিহিল কারীম, ওয়া সুলত্বানিহিল কাদীম, মিনাশ শাইত্বানির রাজীম। বিসমিল্লাহি, ওয়াল হামদু লিল্লাহি, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ। আল্লাহুম্মাগফির্ লি যুনূবী, ওয়াফতাহ্ লি আবওয়াবা রাহমাতিকা।
অর্থ: আমি মহান আল্লাহর, তাঁর মর্যাদাপূর্ণ চেহারা এবং চিরন্তন কর্তৃত্বের মাধ্যমে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় চাই। আল্লাহর নামে (আমি প্রবেশ করছি), সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর রাসুলের ওপর শান্তি ও সালাম বর্ষিত হোক।হে আল্লাহ, আপনি আমার গুনাহসমূহ মাফ করে দিন এবং আপনার রহমতের দরজাসমূহ আমার জন্য খুলে দিন।
কাবা দেখে যে দোয়া পড়বেনاللّٰهُمَّ زِدْ هٰذَا الْبَيْتَ تَشْرِيفًا وَتَعْظِيمًا وَتَكْرِيمًا وَمَهَابَةً، وَزِدْ مَنْ شَرَّفَهُ وَكَرَّمَهُ مِمَّنْ حَجَّهُ أَوِ اعْتَمَرَهُ تَشْرِيفًا وَتَكْرِيمًا وَتَعْظِيمًا وَبِرًّا، اللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ، وَمِنْكَ السَّلَامُ، فَحَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلَامِ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা যিদ্ হা-যাল বাইতা তাশরীফান ওয়া তা'যীমান ওয়া তাকরীমান ওয়া মাহাবাতান, ওয়া যিদ্ মান শাররাফাহু ওয়া কাররামাহু মিম্মান হাজ্জাহু আওয়ি‘তামারাহু তাশরীফান ওয়া তাকরীমান ওয়া তা‘যীমান ওয়া বিররান। আল্লাহুম্মা আন্তাস্ সালাম, ওয়া মিন্কাস্ সালাম, ফা-হাইয়িনা রাব্বানা বিস্ সালাম।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি এই ঘরকে অধিক মর্যাদা, মহত্ত্ব, সম্মান এবং ভয়-ভীতির স্থল বানান। যারা এটির হজ বা উমরাহ করেছে, তাদের মধ্য থেকে যারা এই ঘরকে সম্মান করেছে, তাদেরও অধিক মর্যাদা, সম্মান, মহত্ত্ব এবং নেকি দান করুন।হে আল্লাহ, আপনি তো শান্তি, আপনার কাছ থেকেই শান্তি, সুতরাং আমাদেরকে আপনি শান্তিতে বাঁচিয়ে রাখুন।
তাওয়াফের সময় রুকন ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মাঝামাঝি জায়গায় পৌঁছে এই দোয়া পড়ুনرَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً، وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً، وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ.
উচ্চারণ: রব্বানা আ-তিনা ফিদ্-দুন্ইয়া হাসানাহ, ওয়া ফিল-আ-খিরাতি হাসানাহ, ওয়া ক্বিনা ‘আযা-বান্ নার।
অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন, আখিরাতেও কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন। (সুরা বাকারা: ২০১)
সাফা-মারওয়া সাঈর সময় যে দোয়া পড়বেনসাফা-মারওয়াতে সাঈর সময় সাফাতে উঠতে গিয়ে প্রথমে আল্লাহ তাআলার বাণী দিয়ে শুরু করবেন,
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ ۖ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا ۚ وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
উচ্চারণ: ইন্নাস্-সফা-ওয়াল্-মারওয়াতা মিন্ শা’আ-ইরিল্লাহি; ফা-মান্ হাজ্জাল্-বাইতা আওই’ত্তামারা ফালা জুনাহা ‘আলাইহি আই ইয়াত্তাওওয়াফা বিহিমা, ওয়া মান্ তাতাও্ওয়া’ খাইরান ফা-ইন্নাল্লাহা শাকিরুন্ আলীম।
অর্থ: নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং কেউ যদি হজ বা ওমরাহ করে, তাহলে তার জন্য এ দুটির মাঝে সাঈ করায় কোনো দোষ নেই। আর যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোনো সৎকর্ম করে, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ কৃতজ্ঞ ও সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা: ১৫৮)
এরপর বলুন:
أبدأُ بما بدأَ اللهُ بهِ
উচ্চারণ: আবদাউ বিমা বাদাআল্লাহু বিহি
অর্থ: আমি শুরু করছি, যেভাবে আল্লাহ শুরু করেছেন।
উঠতে উঠতে কাবা নজরে পড়লে কাবমুখী হয়ে দুই হাত উঠিয়ে করে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়ুন:
اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُ أَكْبَرُ، لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، أَنْجَزَ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ.
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ও হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর। লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, আনজাযা ওয়া’দাহু, ওয়া নাসারা ‘আবাদাহু, ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু
অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। তাঁরই জন্য রাজত্ব, তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই দলবদ্ধ শত্রুদের পরাজিত করেছেন।
মারওয়া পাহাড়ে ওঠার সময়ও একই নিয়মে দোয়া পড়ুন।
আরাফায় অবস্থানের সময় যে দোয়া পড়বেনআব্দুল্লাহ ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত রয়েছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো আরাফার দিনের দোয়া যা আমি পাঠ করেছি ও আমার পূর্ববর্তী নবিগণ পাঠ করেছেন, দোয়াটি হলো:
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْء قدير
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহদাহূ লা শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তার কোন শরিক নেই। তারই রাজত্ব, তার জন্যই সকল প্রশংসা। তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।(সুনানে তিরমিজি: ৩৫৮৫)
হজের সফরে অবসরে ও বিভিন্ন আমলের সময় বারবার এই দোয়াগুলো পড়ুনএছাড়াও, আরও কিছু মাসনুন দুআ নিচে তুলে ধরা হলো, হজের সফরে যে কোনো সময় এ দোয়াগুলো পড়তে পারেন:
১.
رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
উচ্চারণ: রাব্বানা লা তু’আখিযনা ইন্ নাসীনা আও আখতা’না। রাব্বানা ওয়া লা তাহমিল ‘আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহু ‘আলাল্লাযীনা মিন্ কাবলিনা। রাব্বানা ওয়া লা তুহাম্মিল্না মা লা ত্বাকাতা লানা বিহি। ও’আফু ‘আন্না ওয়াগফির লানা ওয়ারহামনা। আন্তা মাওলানা ফানসুরনা ‘আলাল্-কাওমিল্-কাফিরীন।
অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা যদি ভুলে যাই বা ভুল করি, তবে আমাদেরকে আপনি পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের রব! আমাদের ওপর এমন ভার প্রয়োগ করবেন না যেমন ভার আপনি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর দিয়েছিলেন। হে আমাদের রব! আমাদের ওপর আপনি এমন কিছু চাপিয়ে দেবেন না যা বহন করার ক্ষমতা আমাদের নেই। আর আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন, আমাদের গুনাহ মাফ করে দিন, আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনি তো আমাদের অভিভাবক। অতএব, আপনি কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।
২.
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
উচ্চারণ: রব্বানা আফরিগ ‘আলাইনা সাবরান্, ওয়া তাওয়াফফানা মুসলিমীন।
অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের ওপর ধৈর্য ঢেলে দিন এবং আমাদের মুসলমান হিসেবে মৃত্যু দান করুন। (সুরা আ'রাফ: ১২৬)
৩.
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
উচ্চারণ: রব্বানাগফির লানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা, ওয়া সাব্বিত আকদামানা ওয়ানসুরনা আলাল্-কাওমিল্-কাফিরীন।
অর্থ: হে আমাদের রব! আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন, আমাদের কাজে আমাদের সীমালঙ্ঘন ক্ষমা করুন, আমাদের পদসমূহ দৃঢ় করুন এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করুন। (সুরা আলে ইমরান: ১৪৭)
৪.
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
উচ্চারণ: রব্বানা যালামনা আনফুসানা, ওয়া ইল্লাম্ তাগফির্ লানা ওয়া তারহামনা লানাকূনান্না মিনাল্-খাসিরীন।
অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব। (সুরা আ'রাফ: ২৩)
৫.
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلَاةِ وَمِن ذُرِّيَّتِي ۚ رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
উচ্চারণ: রব্বিজ‘আলনী মুকীমাস্ সালাতি ওয়া মিন্ জুররিইয়াতি, রব্বানা ওয়া তাক্বাব্বাল্ দু‘আ। রব্বানাগফির্ লী ওয়া লি-ওয়ালিদাইয়া ওয়া লিল্-মু’মিনীনা ইয়াওমা ইয়াকূমুল্ হিসাব।
অর্থ: হে আমার রব! আমাকে সালাত প্রতিষ্ঠাকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও। হে আমাদের রব! আমার দোয়া কবুল করুন। হে আমাদের রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সমস্ত মু’মিনদেরকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে। (সুরা ইবরাহিম: ৪০-৪১)
৬.
رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا وَاغْفِرْ لَنَا رَبَّنَا إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
উচ্চারণ: রব্বানা লা তাজ‘আল্না ফিতনাতাল্ লিল্লাযীনা কাফারু, ওয়াগফির লানা। রব্বানা ইন্নাকা আন্তাল ‘আযীযুল হাকীম।
অর্থ: হে আমাদের রব, কাফিরদের জন্য আমাদেরকে পরীক্ষার কারণ কোরো না এবং আমাদেরকে ক্ষমা করো। হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই তুমি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। (সুরা মুমতাহিনা: ৬০:৫)
হজের সফর থেকে ফেরার সময় যে দোয়া পড়বেনاللّٰهُ أَكْبَرُ، اللّٰهُ أَكْبَرُ، اللّٰهُ أَكْبَرُ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ آيِبُونَ، تَائِبُونَ، سَاجِدُونَ لِرَبِّنَا، حَامِدُونَ صَدَقَ اللّٰهُ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু। ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। আ-য়িবুনা, তা-ইবুনা সাজিদুনা লিরাব্বিনা হামিদুনা। সাদাকাল্লাহু ওয়াদাহু ওয়া নাসারা আবদাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু।
অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। তাঁরই জন্য রাজত্ব, তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আমাদের পালনকর্তার কাছে আবার আমরা ফিরে আসব, তাঁরই প্রতি আমরা অভিমুখী হই এবং তাঁর প্রতি সিজদা আদায় করি। তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই দলবদ্ধ শত্রুদের পরাজিত করেছেন।
ওএফএফ/এমএস