ক্ষণজন্মা যে ক’জন ক্রিকেটার বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বদলে দিয়েছিলেন, যাদের ছোঁয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের গতিপথ বদলেছিল, তাদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ আশরাফুল। একটা সময় আশরাফুলের ব্যাট কথা না বললে বাংলাদেশের হাতে সাফল্য ধরা দিতো না, সেই মোহাম্মদ আশরাফুলের ৪১তম জন্মদিন আজ।
Advertisement
১৯৮৪ সালের ৭ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ট সেঞ্চুরিয়ান। বাংলাদেশ ক্রিকেটে তিনি যতটা নন্দিত ব্যাটার ছিলেন, ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ততটাই নিন্দিত হয়েছিলেন। তবে আশরাফুল এখনও সমান জনপ্রিয়। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এখনও তাকে ভালোবাসে।
আশরাফুলের যখন অভিষেক হয়, তখন বাংলাদেশ দলের অবস্থা ছিল অনেক হতাশাজনক। অথচ, ২০০১ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মুত্তিয়া মুরালিধরনের মতো বোলারদের মোকাবেলা করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সেঞ্চুরিটি করেন তিনি।
২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে এক টেস্টে অপরাজিত ১৫৮ রানের ইনিংস খেলে তাক লাগিয়ে দেন। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের কার্ডিফে অসাধারণ সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেন।
Advertisement
ওটাই ছিল তার ক্যারিয়ারের শীর্ষ অবস্থান। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক করা হয়েছিল তাকে। এতে করে তার ব্যাটিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং বাংলাদেশ তার অধীনে একটিও টেস্ট জিততে পারেনি। দুই বছর পর অধিনায়কত্ব হারান। তাকে নেতৃত্ব থেকে সরানো হয় মূলত, যেন ব্যাটিংয়ে মনযোগ দিতে পারেন। ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে খেলেছিলেন ১৯০ রানের অনবদ্য এক ইনিংস।
২০১৩ সালে, বিপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করার পর আশরাফুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বোর্ড তাকে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে, যার মধ্যে তিন বছর স্থগিত করা হয়।
এরপর ক্রিকেটে ফিরে এলেও জাতীয় দলে আর ফিরতে পারেননি বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই ক্রিকেটার।
মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্ম, ১৯৮১
Advertisement
‘ক্যাপ্টেন কুল’- মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্ম ১৯৮১ সালের এই দিনে, ঝড়াখন্ডের রাঁচিতে। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার নিজেকে প্রমাণ করতে সময় নেননি। পাকিস্তানের বিপক্ষে পঞ্চম ওয়ানডে এবং পঞ্চম টেস্টে ১৪৮ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। ক্রিজে তার সাহসী মনোভাব এবং সাফল্যের সাথে সাথে তাকে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের সাথে তুলনা করা হতে থাকে। ছিলেন মাইকেল বেভানের মত দুর্দান্ত এক ফিনিশার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র তিন বছর পর ধোনিকে ভারতের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করা হয়। তার নেতৃত্বে ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে ভারত। ২০০৮ সালের শেষের দিকে তিনি টেস্ট অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন এবং তার অধীনে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্মরণীয় সিরিজ জয় করে ভারত। একই সঙ্গে ভারত এই ফর্ম্যাটে এক নম্বরেও উঠে আসে।
২০১১ এবং ২০১২ সালে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে টানা আটবার বিদেশের মাটিতে পরাজিত হওয়ার পরও তাকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়নি। এর কারণ ছিল, ২০১১ সালে ভারতকে দ্বিতীয়বার ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রাখেন।
ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করার ক্ষেত্রে ভারতের হয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এরপর তার অধীনে ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শিরোপাও জয় করে ভারত। এর পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে অপরাজিত থেকেও শিরোপা জিততে পারেননি। ওই বছরই শেষের দিকে, অস্ট্রেলিয়া সফরের সময়, তিনি টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন এবং টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন।
২০১৭ সালে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকেও পদত্যাগ করেন। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ছিল ভারতের হেয়ে ধোনির শেষ ম্যাচ। এর এক বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই বিদায় নেন তিনি।
আইএইচএস/