খেলাধুলায় প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এ তত্ত্ব মেনে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের নতুন কমিটি বেশকিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ‘ট্রেইন অ্যান্ড টেস্ট’ পলিসির মাধ্যমে ফেডারেশন বিভিন্ন পর্যায়ের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দেবে এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদের পারফরম্যান্স খতিয়ে দেখবে।
Advertisement
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করে। মাস তিনেক পর রোববার নতুন কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে তাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।
বিওএ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন তারা পাঁচটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। ১. বিটিটিএফ প্রেসিডেন্ট কাপ, ২. আম্প্যায়ার্স রিফ্রেশার্স কোর্স এবং আম্পায়ারর্স বেসিক কোর্স, ৩. ফেডারেশন কাপ টেবিল টেনিস টুর্নামেন্ট, ৪. জাতীয় টেবিল টেনিস টুর্ণামেন্ট এবং ৫. ঢাকা টেবিল টেনিস লিগ।
আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিসে বাংলাদেশের একমাত্র স্বর্ণ এসেছিল ২০২২ সালের মালদ্বীপে দক্ষিণ এশিয় যুব টেবিল টেনিসে। এরপর সম্ভাবনা তৈরি করেও শেষ মুহূর্তে আর সোনার দেখা মেলেনি। এবার নেপালে অনুষ্ঠিতব্য একই টুর্ণামেন্টে আবার সোনার প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন (বিটিটিএফ)।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এম এস জামান, সহ-সভাপতি তাহমিনা তারমিন বিনু, বিকেএসপির উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ) উজ্জ্বল চক্রবর্তী, মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান সুজন মাহমুদ, ফেডারেশনের সদস্য আহমেদ উল্লাহ, কাজী মুহাম্মদ আসিফ এবং মো. মাইনুল ইসলাম চিশতী।
১৮ সদস্যের দল নেপালে যাচ্ছে। ৩ জন করে অনূর্ধ্ব-১৯ বালক ও বালিকা, ৩ জন করে অনূর্ধ্ব-১৫ বালক ও বালিকার পাশাপাশি ১ জন করে অতিরিক্ত খেলোয়াড় নেয়া হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে যাদের নেওয়া হবে তাদের খরচ ফেডারেশন থেকে বহন করা হচ্ছে। জাতীয় যুব দলের ১৬ খেলোয়াড়ের মধ্যে ১১ জনই ঢাকা বিকেএসপির। ৩ জন খুলনা বিকেএসপির, ১ জন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এবং ১ জন রাজশাহী জেলার খেলোয়াড়।
অনূর্ধ্ব-১৯ বালক জাতীয় দলের সদস্যরা হলেন: হাসিব (অধিনায়ক), নাফিজ (সহ-অধিনায়ক), জয় এবং সাগর। অনূর্ধ্ব-১৯ বালিকা জাতীয় দলের সদস্যরা হলেন- খই খই মারমা (অধিনায়ক), রেশমি (সহ-অধিনায়ক), ঐশি (সেনা বাহিনী) এবং হাবিবা।
অনূর্ধ্ব-১৫ বালক জাতীয় দলের সদস্য হলেন: মনিরুল (অধিনায়ক), রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার রাব্বি (সহ-অধিনায়ক), সোহান এবং শাহীন। অনূর্ধ্ব-১৫ বালিকা জাতীয় দলের সদস্য হলেন রানী (অধিনায়ক), রাফিয়া (সহ-অধিনায়ক), রোজা এবং কেয়া।
Advertisement
খুব স্বল্প সময়ে প্রস্তুতি হলেও বিকেএসপির সহযোগিতায় খুবই ইনসেনটিভ প্রশিক্ষণ হওয়ায় দল নিয়ে খুবই আশাবাদি সাবেক জাতীয় চ্যার্ম্পিন এবং দেশের একমাত্র লেবেল ৩ কোচ খন্দকার মোস্তফা বিল্লাহ। তিনি প্রধান কোচ হিসেবে দলের সাথে যাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে দলের সাথে যাচ্ছেন সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এবং বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের যুগ্ম-সম্পাদক নাসিমুল হাসান কচি।
নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে প্রথম একমি কাপ উম্মুক্ত টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। গত ২১ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই প্রতিযোগিতায় সাড়ে তিনশত টেবিল টেনিস খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছেন।
এছাড়া ২১ জন লেভেল-১ কোচকে আইটিটিএফ এর অফিসিয়াল জর্ডানের মোহাম্মদ আতুম-এর তত্ত্বাবধানে ১৪ থেকে ১৯ এপ্রিল বিকেএসপিতে আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দ্রুতই দেশে আরো ৩০ জন লেভেল-১ কোচ তৈরি করা হবে।
সামনে টেবিল টেনিসের দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আছে। নভেম্বরে সৌদি আরবে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস এবং ২০২৬ এর জানুয়ারিতে পাকিস্তানে হবে এসএ গেম। এই গেমস সামনে রেখেও ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ফেডারেশনের নতুন কমিটি।
আরআই/আইএইচএস/