চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয় এক শতাংশেরও কম হারে বেড়ে ৩ দশমিক ০১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আগের বছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ২.৯৯ বিলিয়ন ডলার।
Advertisement
অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়ে ৪০ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার।
সোমবার (৫ মে) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সবশেষ তথ্য অনুসারে, এপ্রিল মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি ০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২৪ সালের এপ্রিলে ছিল ২ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।
Advertisement
এদিকে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ৩২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।
ওভেন পণ্যের রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর নিটওয়্যার পণ্যের রপ্তানি আয় হয়েছে ১৭ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি।
রপ্তানির মন্থর প্রবৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে রপ্তানিকারকেরা দীর্ঘ ঈদুল ফিতরের ছুটিকে দায়ী করেছেন। অল্প কর্মদিবসের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে।
বিজিএমইএর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ‘দীর্ঘ ঈদের ছুটির কারণে পণ্য প্রস্তুতের জন্য আমাদের হাতে কর্মদিবস কম ছিল, ফলে চালানও কম হয়েছে। এ কারণেই গত মাসগুলোর তুলনায় রপ্তানি আয়ে ধীরগতি দেখা গেছে। তবে চলতি মাসে তা আবার স্বাভাবিক প্রবাহে ফিরে আসবে।’
Advertisement
রপ্তানিকারকরা আরও দাবি করেছেন, তারা চরম গ্যাস সংকটে ভুগেছেন, যা উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোর মতো প্রবৃদ্ধি ফেরাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
প্রধান প্রধান খাতগুলোর রপ্তানি পরিস্থিতিরপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৮৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের ৮২৪ মিলিয়নের তুলনায় ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি।
হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৭৩ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ০৮ শতাংশ বেড়ে ৯৩২ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, আর প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি আয় ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৬ মিলিয়ন ডলার।
চামড়ার তৈরি জুতার রপ্তানিতে ২৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা আগের বছরের ৪৩২ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪৫ মিলিয়ন ডলার। তবে চামড়াজাত অন্য পণ্যের রপ্তানি ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮০ মিলিয়ন ডলারে।
পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে ৬৮৫ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। হোম টেক্সটাইল খাতে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যেখানে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৭৪০ মিলিয়ন ডলার।নন-লেদার ফুটওয়্যার খাত, যা দেশের একটি উদীয়মান খাত হিসেবে বিবেচিত, রপ্তানি আয়ে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে ৪৪৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা আগের বছর ছিল ৩৪০ মিলিয়ন ডলার। ফার্মাসিউটিক্যালস খাত থেকে রপ্তানি আয় ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৭ মিলিয়ন ডলারে।
আইএইচও/এএসএ/জেআইএম/এমএস