ফিচার

গানে গানে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন নিপা আহমেদ সারাহ্‌

জ্যোতিষ সমাদ্দার বাবু

Advertisement

সংগীত হলো গীত, বাদ্য, নৃত্য—এ তিনটি বিষয়ের সমাবেশ। এক ধরনের শ্রবণযোগ্য যে কলা, যা সুসংবদ্ধ শব্দ ও নৈঃশব্দের সমন্বয়ে মানবচিত্তে বিনোদন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। স্বর ও ধ্বনির সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় গীতের। এ ধ্বনি হতে পারে মানুষের কণ্ঠনিঃসৃত ধ্বনি, হতে পারে যন্ত্রোৎপাদিত শব্দ অথবা উভয়ের সংমিশ্রণ। কণ্ঠে যদি সুমধুর সুর থাকে, তবে তা মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেবে।

তেমনই একজন কণ্ঠশিল্পীর কথা পাঠকদের সামনে তুলে ধরছি। যার কণ্ঠে পল্লীগীতি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, হাসন রাজার গান, লালনগীতি শুনলে হৃদয় স্পর্শ করে। তবে তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গানও গেয়ে থাকেন। মরমি এ সংগীতশিল্পীর নাম নিপা আহমেদ সারাহ্‌। ফরিদপুর জেলায় যার জন্ম। তার মায়াবী কণ্ঠে গান শুনলে মনে পড়ে কোকিলকণ্ঠী নীনা হামিদকে। যেন তাঁরই কণ্ঠ ভেসে আসছে।

সুরেলা কণ্ঠ হলো সৃষ্টিকর্তার দান। সংগীতশিল্পী নিপার সবচেয়ে বড় গুণ তার নম্রতা, সভ্যতা, অমায়িকতা, সর্বোপরি নিরহংকারী একজন মানুষ। নিপা আহমেদ সারাহ্‌ শুধু সংগীতশিল্পীই নন; তিনি একজন মডেলও বটে। মাটির গান নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছা আছে তার। দীর্ঘদিন ধরে সংগীত সাধনা করছেন। তার ধ্যান-জ্ঞান শুধুই সংগীত। বেশিরভাগ সময় গান গেয়েই কেটে যায়। একনাগাড়ে ৪-৫ ঘণ্টা গান গাইলেও এতটুকু ক্লান্তির ছাপ পড়ে না। তিনি বাংলাদেশ বেতার, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের নিবন্ধিত শিল্পী। এ ছাড়া বিটিভিতে দলীয়ভাবে নিবন্ধিত। তার ঝুলিতে বেশ কিছু পুরস্কারও আছে।

Advertisement

আরও পড়ুনরঙের ক্যানভাসে জিয়াউরের স্বপ্নের সংগ্রাম নকল চাবি তৈরি করে মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা 

সম্প্রতি তিনি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব, বাংলা একাডেমির বইমেলা এবং শিল্পকলা একাডেমির পিঠা উৎসবেও মাটির গান পরিবেশন করেন।

লালন ফকিরের ‘আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে/ জনম ভরে একদিনও দেখলাম না তারে’; মডার্ন ভাওয়াইয়া ‘চ্যাংরা বন্ধুুয়া রে তোমাক দেখি বুক ধুক ধুক করে’; জসীম উদ্‌দীনের লেখা ‘আমার হাড় কালা করলাম রে/ আমার দেহ কালার লাইগা রে’; হাসন রাজার গান ‘আগুন লাগাইয়া দিলো কনে হাসন রাজার মনে’; লোকসংগীত ‘সোনাবন্ধু তুই আমারে করলি রে দিওয়ানা/ মনে তো মানে না দিলে তো বুঝে না’ এবং ‘বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে’—এমন অসংখ্য গান নিপা পরিবেশন করেন।

তার মায়াবী কণ্ঠের গান শুনতে শুনতে দর্শক অভিভূত হয়ে পড়েন। নিপার বেশ কিছু মৌলিক গান এবং মিউজিক ভিডিও আছে। যেখানে তিনি নিজেই মডেল হয়েছেন। গান গাওয়ার সময় গানগুলো তার মনের গহীন থেকে উঠে আসে। হারিয়ে যান সেই গানের সুরে। লালনের গান যখন গান; তখন ভাব জগতে চলে যান। তখন গানটি শ্রোতাদের অন্তরের আরও গভীরে প্রবেশ করে। তার কণ্ঠের গান কোটি কোটি মানুষের অন্তরে চিরহরিৎ হয়ে থাকবে।

Advertisement

লেখক: সাংবাদিক ও সংগঠক।

এমএমএফ/এসইউ