লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের খাবার খেয়ে শিশুসহ তিন পরিবারের ১২ জন অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাদের ঘরের মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের অনুপস্থিতিতে ঘরে থাকা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে দেওয়া হয়। এতে খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা মালামাল চুরি করে পালিয়ে যায়।
Advertisement
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সদর হাসপাতালে শিশুসহ ৯ জন চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে চারজন শিশু, চারজন নারী ও একজন পুরুষ।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার চর ফলকন ইউনিয়নের ফলকন গ্রামে শাহজাহান মির্দার বাড়িতে ঘটনা ঘটে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরূপ পাল বলেন, ৯ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এরমধ্যে দুজন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। অন্যরা এখনো পর্যবেক্ষণে রয়েছে। অজানা বিষ খাইয়ে তাদের অচেতন করা হয়েছে।
Advertisement
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকজন রাতে সুস্থ হয়েছেন। অন্যরা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত ঘটনাটি নিয়ে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।
অসুস্থদের মধ্যে মো. শাহজাহান মির্দা (৭০), নুর ভানু (৬৫), পান্না আক্তার (২৭), আকলিমা বেগম (২০), আরমান হোসেন (১০), ইমরান হোসেন (৪), নুসরাত (৪), মরিয়ম (৪), পলি আক্তার (১৬), পিংকি বেগম (২৫) ও মো. নিশান (২৮)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হওয়া পলি আক্তার জানান, মঙ্গলবার বিকেলে তারা প্রতিবেশী এক বাড়িতে বিয়ে অনুষ্ঠান দেখতে যায়। সেখান থেকে ফিরে ঘরে থাকা রান্না করা হাঁসের মাংস দিয়ে খাবার খান তারা। এরপর আর কিছু মনে নেই তার। চেতনা ফিরে এসে দেখেন তিনি হাসপাতালে।
ভুক্তভোগী শাহজাহান মির্দার কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিবেশী বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার পর বাড়ি খালি ছিল। এরমধ্যেই দুর্বৃত্তরা ঘরের রান্না করা খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে যায়। তিনটি পরিবারের ১২ জন সদস্য খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যেই তারা অচেতন হয়ে পড়ে। এতে রাতে পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়ি ফিরে একাধিকবার ডাকাডাকি করলেও কারো কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখতে পায় সবাই অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তাৎক্ষণিক সবাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্বৃত্তরা ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে।
Advertisement
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানা জানান, অচেতন অবস্থায় ১২ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এরমধ্যে ৯ জনকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অসুস্থদের খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক জাতীয় ওষুধ মেশানো ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরআগে রোববার রাতে রামগঞ্জ উপজেলার লামচর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক ওষুধ মিশিয়ে ৫ জনকে অচেতন করে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির ঘটনা ঘটে।
কাজল কায়েস/আরএইচ