বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে চিকিৎসকদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, নতুন রোগের আবির্ভাব হচ্ছে এবং আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে। অথচ আমাদের দেশে একজন চিকিৎসক একবার এমবিবিএস বা বিশেষায়িত ডিগ্রি অর্জন করলে তার দক্ষতা যাচাই বা হালনাগাদের তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে অনেক চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে পুরোনো চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করেন, যা রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবার মানের জন্য হুমকিস্বরূপ।
Advertisement
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর পুনর্মূল্যায়ন (revalidation) ও দক্ষতা যাচাইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে চিকিৎসকদের সর্বদা আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সুযোগ তৈরি হয় এবং রোগীরা সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা পান।
উদাহরণস্বরূপ:• যুক্তরাজ্য:• প্রতি পাঁচ বছরে একবার চিকিৎসকদের পুনর্মূল্যায়ন করা হয়।• লাইসেন্স নবায়নের জন্য রোগীর মতামত, সহকর্মীদের মূল্যায়ন এবং দক্ষতা উন্নয়নের রেকর্ড জমা দিতে হয়।• যুক্তরাষ্ট্র:• চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট সময় পর বোর্ড সার্টিফিকেশন পরীক্ষা দিতে হয়।• বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক।• সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়া:• চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট সময়ে প্রশিক্ষণ নিতে হয়।• নির্ধারিত ক্রেডিট অর্জন না করলে লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না।
বাংলাদেশে এ ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় অনেক চিকিৎসক পুরোনো ও অপ্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করেন, যা রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
Advertisement
বাংলাদেশের হাসপাতাল ব্যবস্থার বর্তমান চিত্র উদ্বেগজনক। সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত টেকনোলজিস্ট না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দ্বারা সম্পন্ন হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে এমনকি সুইপার দিয়ে টেস্ট করানোর অভিযোগ রয়েছে, যা চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য ভয়ংকর সংকেত। বর্তমানে দেশে হাজার হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্টের পদ শূন্য রয়েছে, অথচ প্রয়োজনীয় নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে, যদি রোগ নির্ণয়ই ভুল হয়, তাহলে চিকিৎসক সঠিকভাবে চিকিৎসা দেবেন কীভাবে, আর রোগীর সুস্থতা নিশ্চিত হবে কি করে?
অন্যদিকে বাংলাদেশে চিকিৎসকরা একবার ডিগ্রি অর্জন করলেই আজীবনের জন্য চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু পেশাগত দক্ষতা হালনাগাদ বা যাচাইয়ের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো দেখা যায়:
• অপ্রচলিত ও ভুল চিকিৎসা: অনেক চিকিৎসক আধুনিক গবেষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন পদ্ধতি অনুসরণ করেন।• ভুল ওষুধের ব্যবহার: অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক বা অনুপযুক্ত ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।• প্রশিক্ষণের অভাব: চিকিৎসকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন বাধ্যতামূলক নয়।• রোগীর প্রতি অবহেলা: পেশাগত উন্নয়নের অভাবে চিকিৎসকরা কখনও কখনও রোগীদের প্রতি প্রয়োজনীয় মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হন।
প্রস্তাবিত সমাধান ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপবাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে চিকিৎসকদের জন্য বাধ্যতামূলক দক্ষতা উন্নয়ন ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো হতে পারে:
Advertisement
• প্রতি পাঁচ বছর অন্তর চিকিৎসকদের দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।• আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেডিট পয়েন্ট অর্জন বাধ্যতামূলক করা।
২. লাইসেন্স নবায়নের জন্য নির্দিষ্ট শর্ত নির্ধারণ করা• নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা সম্পন্ন না করলে চিকিৎসকের লাইসেন্স নবায়ন স্থগিত রাখা।• রোগীর মতামত ও সহকর্মীদের পর্যালোচনার ভিত্তিতে চিকিৎসকদের মূল্যায়ন করা।
৩. ডিজিটাল ডাটাবেজ ও ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালু করা• চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ, পরীক্ষা ও দক্ষতার অগ্রগতি ট্র্যাক করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল সিস্টেম চালু করা।• স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসকদের তথ্য সংরক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ করা।
৪. বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপ আয়োজন করা• আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, নতুন রোগের গবেষণা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।• মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা।
৫. ভুল চিকিৎসা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা• ভুল চিকিৎসার বিরুদ্ধে রোগীদের অভিযোগ গ্রহণ ও যথাযথ তদন্তের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।• অযোগ্য চিকিৎসকদের জন্য সতর্কতা, সাময়িক বরখাস্ত বা লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা রাখা।
আরও পড়ুন মোদের গরব, মোদের আশা, আ’মরি বাংলা ভাষা আগে নিজের সংশোধন তারপর দেশ বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের শেকড়এআই টেকনোলজির মাধ্যমে নতুন মেডিক্যাল ডিভাইস এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা: সেকেন্ড ওপিনিয়ন ও গবেষণা কার্যক্রম এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তির ব্যবহার স্বাস্থ্যখাতে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে নতুন মেডিক্যাল ডিভাইস এবং সঠিক ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে। বিশ্বব্যাপী মেডিক্যাল ডিভাইসের ক্ষেত্রে এআই অনেক উন্নতি সাধন করেছে, যা রোগীর নির্ণয়, চিকিৎসা প্রক্রিয়া এবং চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে মেডিক্যাল ডিভাইসের উন্নয়নএআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন ধরনের মেডিক্যাল ডিভাইস যেমন• চিকিৎসক সহায়িকা সফটওয়্যার যা রোগীর ল্যাব রিপোর্ট, স্ক্যান ইমেজ এবং রোগীর পূর্ববর্তী ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে রোগের নির্ণয় প্রদান করে।• অটোমেটেড ডায়াগনস্টিক টুলস: যেমন এক্সরে বা এমআরআই ইমেজ অ্যানালাইসিসের জন্য এআই প্রযুক্তির ব্যবহার, যা মানুষের চোখের তুলনায় দ্রুত এবং সঠিকভাবে রেডিওলজি বা প্যাথোলজি রিপোর্ট তৈরি করতে সক্ষম।• চিকিৎসা প্রক্রিয়া কন্ট্রোল সিস্টেম: হাসপাতালের এবং ক্লিনিকের চিকিৎসা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য এআই ভিত্তিক ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সময়মতো সঠিক চিকিৎসা প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সাহায্য করছে।• কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ রোবোটিক সার্জারি: যা সার্জনের গাইডলাইনের মাধ্যমে একেবারে নিখুঁতভাবে অস্ত্রোপচার পরিচালনা করতে সক্ষম।
সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গবেষণা কার্যক্রমএআই টেকনোলজি, নতুন ডিভাইস এবং চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গবেষণা কার্যক্রম অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ:১. ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস: নতুন মেডিক্যাল ডিভাইস বা সিস্টেমের সঠিকতা ও কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য নিয়মিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস চালানো হচ্ছে। এআই ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে মানবিক পরীক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ফলাফল মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
২. সেকেন্ড ওপিনিয়ন: এআই-ভিত্তিক সেকেন্ড ওপিনিয়ন সিস্টেম বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেক রোগী এখন তাদের চিকিৎসা বা নির্ণয়ের জন্য দ্বিতীয় মতামত নিতে চান। এআই সিস্টেমগুলো প্রাথমিক ডায়াগনস্টিক তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং চিকিৎসকদের গাইডলাইন হিসেবে কাজ করে। এটি রোগীদের জন্য নতুন একটি সুবিধা প্রদান করছে, যাতে ভুল সিদ্ধান্তের ঝুঁকি কমে এবং রোগীরা নিশ্চিত হতে পারেন।
৩. মেডিক্যাল ডিভাইসের নিয়মিত মূল্যায়ন: আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে মেডিক্যাল ডিভাইসের ব্যবহারে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। নতুন ডিভাইস ও প্রযুক্তির ব্যবহার সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, সেজন্য নিয়মিত মনিটরিং এবং মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
৪. অ্যালগরিদম ট্রেনিং এবং আপডেট: মেডিক্যাল ডিভাইস ও সিস্টেমে ব্যবহৃত অ্যালগরিদমগুলোর আপডেট ও প্রশিক্ষণ চলমান থাকে। নতুন রোগ বা চিকিৎসার পদ্ধতিতে অ্যালগরিদম ট্রেনিং এর মাধ্যমে উন্নতি সাধন করা হয়, যাতে ডিভাইসগুলো সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করে।
৫. ইথিক্যাল স্টাডিজ ও পলিসি ডেভেলপমেন্ট: এআই এবং মেডিক্যাল ডিভাইসের ব্যবহারের মাধ্যমে আস্থার প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। তাই এআই টেকনোলজি ব্যবহার ও মেডিক্যাল ডিভাইসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সঠিক নৈতিক মানদণ্ড ও আইনি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
গবেষণা ও উন্নয়ন চালু রয়েছে কি?এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন মেডিক্যাল ডিভাইসের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও গবেষণাকেন্দ্র পৃথিবীজুড়ে কাজ করছে। বেশ কিছু গবেষণামূলক কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠান তাদের প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সঠিক ব্যবহার সংক্রান্ত গবেষণায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত। বাংলাদেশে কিছু প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সেকেন্ড ওপিনিয়ন সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, তবে এই খাতে আরও জোরালো পদক্ষেপ এবং গবেষণা জরুরি।
এআই টেকনোলজি এবং মেডিক্যাল ডিভাইসের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, বিশেষ করে সেকেন্ড ওপিনিয়ন সংক্রান্ত সিস্টেম, একটি নতুন দিগন্ত খুলেছে স্বাস্থ্যখাতে। তবে এই প্রযুক্তির ব্যবহারের সঠিকতা, নিরাপত্তা এবং উন্নত মানের জন্য গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখার প্রয়োজন রয়েছে। প্রযুক্তির সাথে চলতে গিয়ে সঠিক ও নিরাপদ ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দিয়ে রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে একটি কার্যকর, নিরাপদ এবং উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়।
শুধু চিকিৎসা খাত নয়, অন্যান্য পেশাগত ক্ষেত্রেও দক্ষতা যাচাই জরুরিশুধু চিকিৎসকদের জন্য নয়, দেশের অন্যান্য পেশার ক্ষেত্রেও একই ধরনের দক্ষতা যাচাই ব্যবস্থা থাকা জরুরি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা একবার একটি চাকরিতে ঢোকার পর আর নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নে সচেষ্ট হন না। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা কমে যায় এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
বিশেষ করে শিল্প, উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা খাতে CGMP (Current Good Manufacturing/Management Practice) যথেষ্ট পরিমাণে অনুসরণ করা হয় না। উন্নত দেশগুলোতে এটি বাধ্যতামূলক, যাতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আধুনিক ব্যবস্থাপনা কৌশল ও উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে আপডেটেড থাকতে পারেন।
অন্যান্য খাতে দক্ষতা উন্নয়নে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা• সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম চালু করা।• CGMP বাস্তবায়ন নিশ্চিতে বিশেষায়িত মূল্যায়ন ও অডিট ব্যবস্থা চালু করা।• কর্মীদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর দক্ষতা মূল্যায়ন ও পুনপ্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা।• আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে পরিচালনা প্রক্রিয়ায় গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য পেশাগত ক্ষেত্রের উন্নতির জন্য নিয়মিত দক্ষতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা এখন সময়ের দাবি। চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে যেমন পুনর্মূল্যায়ন ও দক্ষতা যাচাই জরুরি, তেমনি শিল্প, উৎপাদন, প্রশাসন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে CGMP অনুসরণ করা উচিত।
একজন চিকিৎসক যেমন মানুষের জীবন বাঁচান, তেমনি তার ভুল সিদ্ধান্ত জীবন বিপন্ন করতে পারে। তাই চিকিৎসকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করা শুধু একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি একটি মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।
এখনই সময় স্বাস্থ্য, শিল্প ও অন্যান্য পেশাগত খাতের মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সম্মিলিতভাবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে, যেন বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক মানসম্মত চিকিৎসা ও সেবা পেতে পারেন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হন। দক্ষতা উন্নয়ন ও পুনর্মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সময়ের দাবি অনুযায়ী এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
রহমান মৃধা, গবেষক ও লেখক(সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন) Rahman.Mridha@gmail.com
এমআরএম/জিকেএস