জাতীয়

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দাবি করা ২৩ ঘটনার কারণ জানালো প্রেস উইং

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে গণঅভ্যুত্থানের পর গত সাড়ে চার মাসে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ২৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন।

Advertisement

তবে এসব ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব ঘটনা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে তিনি এ কথা জানান।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের এই দাবিকে অন্তর্বর্তী সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয় এবং উল্লিখিত ২৩টি হত্যাকাণ্ডের তালিকা সংগ্রহ করে। ওই তালিকা প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ ও গৃহীত আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

Advertisement

পুলিশ সদরদপ্তর থেকে প্রতিটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। উল্লিখিত ২৩টি ঘটনার ২২টির প্রাথমিক কারণ সম্পর্কে পুলিশ অবগত হয়েছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তবে একটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় একজনকেও হত্যার প্রমাণ পায়নি পুলিশ ‘১৫ বছরের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত’

আবুল কালাম আজাদ বলেন, যে ২২টি ঘটনার বিস্তারিত এরই মধ্যে জানা গেছে তার মধ্যে একটি ঘটনার সঙ্গেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই। হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ সাতটির সঙ্গে চুরি ও দস্যুতার সম্পর্ক রয়েছে, চারটিতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কলহের ঘটনা জড়িত, তিনটি ক্ষেত্রে জেনারেল ক্রাইম যেমন ধর্ষণ, অতিরিক্ত মদপানে মৃত্যু এবং বিদ্রূপ মন্তব্য করা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি থেকে মৃত্যু, দুটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, দুটি ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে মৃত্যু, একটিতে স্থানীয়দের সংঘাতে মৃত্যু, একটি জমিজমার বিরোধ সংক্রান্ত ঘটনায় মৃত্যু, একটি আত্মহত্যার ঘটনা এবং একটি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো না জানা গেলেও এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সেখানে কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিষয় নেই।

এই তালিকায় এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি গত বছরের জানুয়ারি মাসে একটি ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ডিসেম্বর মাসে হাসপাতালে মারা যান।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ঘটনাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে এরই মধ্যে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই ২৩ ঘটনার দুটিতে যেখানে আত্মহত্যা ও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে, সেই দুটি ঘটনায় পুলিশ এরই মধ্যে তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। অন্য ২১টি তদন্তাধীন মামলায় এরই মধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং গ্রেফতারদের মধ্যে ১৭ জন নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Advertisement

এই ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের সহিংসতা সমর্থন করে না। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে প্রচারকে উদ্বেগজনক বলে মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা দেশের সার্বিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সূত্রপাত ঘটাতে পারে বিবেচনায় সব পক্ষকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানায় অন্তর্বর্তী সরকার।

এমইউ/ইএ/এএসএম