অমর একুশে বইমেলার আয়োজনে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন-নতুন বই। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার তৃতীয় দিনে এসেছে ৩২ নতুন বই। এর মধ্যে রয়েছে কবিতার বই দশটি, উপন্যাস আটটি, প্রবন্ধ তিনটি, রাজনীতি দুটি, জীবনী দুটি এবং গল্প, ভ্রমণ, ইতিহাস, গবেষণা, শিশুসাহিত্য, বিজ্ঞানবিষয়ক একটি করে বই এসেছে।
Advertisement
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘হায়দার আকবর খান রনো আজীবন বিপ্লব-প্রয়াসী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সোহরাব হাসান। আলোচনায় অংশ নেন আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন, জলি তালুকদার এবং অনন্যা লাবণী পুতুল। সভাপতিত্ব করেন দীপা দত্ত।
সোগরাব হাসান বলেন, বাংলাদেশের বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন হায়দার আকবর খান রনো। তিনি ছিলেন এদেশের বাম রাজনীতির একই সঙ্গে ছাত্র ও শিক্ষক। অগ্রজদের কাছ থেকে যে শিক্ষা নিয়েছেন সেটাই তিনি পৌঁছে দিয়েছেন অনুজ কমরেডদের কাছে। হায়দার আকবর খান রনো কখনো কট্টরপন্থি অনুসারী ছিলেন না। তিনি ভিন্ন মেরুর বামপন্থি নেতাদের একসঙ্গে বসিয়ে আলোচনার পথ খুলে দিতে সচেষ্ট ছিলেন। বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে রনোর ভূমিকা ছিল প্রত্যক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতির বাইরেও বিচিত্র বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল। তিনি মার্ক্সবাদী দর্শন ও বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো অত্যন্ত সহজ ভাষায় পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন।
Advertisement
এছাড়া আলোচকরা বলেন, ছোটবেলা থেকেই হায়দার আকবর খান রনো প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার মধ্যদিয়ে বড় হয়ে উঠেছেন। মার্কসীয় তত্ত্ব অধ্যয়ন ও অনুশীলনের সমন্বয় ঘটেছিল তার জীবনে। শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল গভীর। মানুষ হিসেবে অত্যন্ত বিনয়ী হায়দার আকবর খান রনো বামপন্থিদের অনেক বিভেদের মধ্যেও নিজের নীতিতে ছিলেন অটল। সমাজতন্ত্রের যে স্বপ্ন তিনি নিজের ভেতর লালন করেছেন, তা নিয়েই আজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে দীপা দত্ত বলেন, হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন আজীবন বিপ্লবী। তিনি কেবল কমিউনিস্ট নেতাই নন, একজন তাত্ত্বিকও। তার লেখনী, রাজনৈতিক আদর্শ, সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা আমাদের জন্য আগামীর প্রেরণা হয়ে থাকবে।
মেলায় ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- কবি চঞ্চল আশরাফ এবং শিশুসাহিত্যিক আতিক হেলাল।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন- কবি মোহন রায়হান ও রেজাউদ্দিন স্টালিন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তি-শিল্পী মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি এবং হ্যাপি হাবিবা। ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামানের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাঁশরী’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী এ কে এম শহীদ কবির, রেজাউল করিম, মিরাজুল জান্নাত সোনিয়া, রত্না দাস, দেবাশীষ শর্মা ও মাহমুদুল হাসান। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ সরকার (তবলা), রবিন চৌধুরী (কী-বোর্ড), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), ফিরোজ খান (সেতার)।
Advertisement
আগামীকালের আলোচনা অনুষ্ঠানআগামীকাল বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘কুমুদিনী হাজং’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পাভেল পার্থ। আলোচনায় অংশ নেবেন মতিলাল হাজং এবং পরাগ রিছিল। সভাপতিত্ব করবেন আবু সাঈদ খান।
এমএইচএ/এমএএইচ/এএসএম