একই আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের দুইরকম চিত্র। দুর্বার রাজশাহী মালিক বারবার কথা দিয়েও ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ করছেন না। বিসিবি সভাপতি এবং সবশেষে ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে কথা বলার পরও পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করেছেন। অবশেষে তাকে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে যেতে হয়েছে। আর বিপরীত চিত্র রংপুর রাইডার্স মালিক পক্ষের। প্রথম ৮ ম্যাচ জেতার পর আবার হারের বৃত্তে আটকে পড়া রংপুরকে টেনে তুলতে মালিক পক্ষ উড়িয়ে আনলো তিন বড় বিদেশি তারকা আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড ও জেমস ভিন্সকে। বিভিন্ন সূত্রে খবর নিয়ে জানা গেছে, এই ৩ বিদেশির সঙ্গে আরও একজন ক্রিকেটারও এসেছেন রংপুর শিবিরে। নাম অ্যানেউরিন ডোনাল্ড। জানা গেছে, এই ৪ জনের পেছনে প্রায় ১ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সোয়া কোটি) খরচ হয়েছে রংপুর ফ্র্যাঞ্জাইজির। ফলাফল, শূন্য।
Advertisement
সোমবার সকালে রাজধানীতে পা রাখা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্দ্রে রাসেল (৪), ইংলিশ জেমস ভিন্স (৭) আর অস্ট্রেলিয়ান টিম ডেভিড (৭) কিছুই করতে পারেননি। ৩ জনের সংগ্রহ ছিল মোটে ১২ রান। আর রংপুর ৮৫-তে অলআউট হয়ে ৯ উইকেটে হেরে বিদায় নিয়েছে এবারের বিপিএল থেকে। খুলনা টাইগার্সের দুই স্পিনার নাসুম আহমেদ আর মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণির মুখেই অসহায় আত্মসমর্পণ তারকায় ঠাসা রংপুরের। নিজের প্রথম ও রংপুর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জেমস ভিন্সকে রিটার্ন ক্যাচ নিয়ে প্রথম আঘাত হানেন নাসুম। তারপর ৪ ওভার টানা বোলিং করে পতন ঘটান আরও ২ উইকেটের। এ বাঁহাতি স্পিনারের বলে বোল্ড হন তিন নম্বরে প্রমোশন পাওয়া শেখ মেহেদী আর লংঅনে ক্যাচ দেন টিম ডেভিড। মোদ্দা কথা, নাসুম আহমেদের ওই টানা স্পেলটিই রংপুরের ‘সর্বনাশ’ ডেকে আনে। শুরুর ধাক্কা আর সামলে উঠতে না পেরে আশির ঘরে থেমে যায় সোহানের দল।
শুনে অবাক হবেন, যার বলে রংপুরের ৩ বিদেশির দুইজন (জেমস ভিন্স আর টিম ডেভিড) আউট, ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে গেলো; সেই নাসুম আহমেদ নাকি জানতেনই না প্রতিপক্ষ দলে কোনো বিদেশি খেলছেন কিনা।
সোমবার ম্যাচসেরা হওয়ার পর অফিসিয়াল প্রেস মিটে এসে নাসুম বললেন, ‘কারা খেলছেন, রংপুরে যে ৩ জন বিদেশি খেলবে তা তো আগে জানতাম না। শুনছিলাম আসবে। সেভাবে প্ল্যানও করতে পারিনি।’ এরপর যোগ করেন, ‘শেরে বাংলার উইকেটে বিদেশিদের বল করতে খুব ভালোই লাগে।’
Advertisement
তাকে কেন শুরুতেই টানা ৪ ওভার বোলিং করানো হলো? সে প্রশ্নের জবাবে নাসুম বলেন, ‘টানা বোলিং করানোর একটাই কারণ রংপুরের ডানহাতি ব্যাটার বেশি ছিল। সেখানে আমার বল কার্যকরী ছিল। তাই মিরাজ টানা করিয়ে গেছে। আগের ম্যাচে ছিল লেফটি-রাইটি এমন। এজন্য টানা করানো যায়নি। আজকে অপশন ছিল দেখে করানো হয়েছে।’ বারকয়েক বলেছেন, শেরে বাংলার এ উইকেটে আমি বিদেশিদের বোলিং করে মজা পাই। উপভোগ করি। তাহলে কি এটা বোলিং ও স্পিন ফ্রেন্ডলি উইকেট ছিল? নাসুম অবশ্য তা মানতে রাজি নন। তার ভাষায়, ‘এটা ১৮০ রানের উইকেট ছিল।’ প্রথম ওভারে সৌম্যর রান আউটটা টার্নিং পয়েন্ট মানছেন নাসুম, ‘আমার কাছে মনে হয় প্রথম রানআউটেই তারা একটু ব্যাকফুটে চলে যায়।’
এআরবি/এমএমআর/এএসএম