আইন-আদালত

পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, ভয়ভীতি দেখানো ও ভাঙচুরের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Advertisement

রোববার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনায়েদের আদালত পরীমনির বিরুদ্ধ অভিযোগ গঠন করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। 

অভিযোগ গঠন ও গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা সুরভি রিফাত। তিনি বলেন, আজ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। পরীমনি অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির না হওয়ায় আমরা সময় চেয়ে আবেদন করি।

অন্যদিকে বাদীপক্ষ অভিযোগ গঠন শুনানির পক্ষে আবেদন করে। আদালতে সময়ের আবেদন নাকচ করে পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। একই সঙ্গে পরীমনির জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। 

Advertisement

২০২২ সালের ৬ জুলাই একই আদালতে সাভার বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন। মামলার অন্য দুই আসামি হলেন পরীমনির সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিম। ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। 

২০২৪ সালের ১৮ মার্চ ঘটনার সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন। আসামি পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে বাদীকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন তিনি। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে গত ২৬ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান পরীমনি। 

বাদী নাছির উদ্দিন এজাহারে উল্লেখ করেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামি দামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢোকেন এবং দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন।  

এতে আরও বলা হয়, বাদী (নাছির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত ১টা ১৫ মিনিটে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাছিরকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাছিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন।  

Advertisement

নাছির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে গালমন্দ করেন। নাছির ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাছির মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। 

এমএএস/এএমএ