খুলনা জেলায় ২০২৫ সালে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বছরের প্রথম দিনে অনাড়ম্বরভাবে পালিত হয়েছে বই উৎসব। ২০২৪ সালে কাঙ্ক্ষিত বইয়ের চাহিদা দেওয়া থাকলেও সময়মতো শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। তবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের পর থেকে ধাপে ধাপে আসতে শুরু করেছে নতুন বই। প্রাথমিকে মোট ৬৮ ভাগ এবং মাধ্যমিকে প্রায় ৫২ ভাগ বই এসেছে। যার শতভাগ শিক্ষার্থীদের মাঝে এরইমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
Advertisement
এদিকে পাঠদান কার্যক্রম চলমান রাখতে বই না পাওয়া বিদ্যালয়ে বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড করে তা দেখে প্রয়োজনীয়টুকু পড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পিডিএফ বই প্রিন্ট করা অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত বইয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।
জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ইবতেদায়ি, দাখিল ও ভোকেশনালসহ ৩ লাখ ৯১ হাজার ৪০ জন শিক্ষার্থীর মাধ্যমিকে ৪২ লাখ ৫২ হাজার ২৪৪ বই এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ৯ লাখ ৮২ হাজার ২৩৩ বইয়ের চাহিদা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বছরের প্রথম দিন খুলনা সদর, খানজাহান আলী, বটিয়াঘাটা, দাকোপ ও তেরখাদা উপজেলায় আংশিক বই সরবরাহ করা হলেও রূপসা, দিঘলিয়া, ডুমুরিয়া, ফুলতলা, কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায় কোনো বই সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তবে গত তিন সপ্তাহে সব উপজেলায় বাংলা, ইংরেজি এবং গণিতসহ অল্প সংখ্যক বই বিতরণ কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে। প্রতিদিনই নতুন বই আসায় শিক্ষার্থীরা একটা-দুইটা করে বই পাচ্ছে।
Advertisement
আরও জানা যায়, প্রাথমিকে চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮ হাজার ৮২১টি বই এবং প্রাক-প্রাথমিকে ৩৮ হাজার ৬৯৪টি বইয়ের মধ্যে ৩৫ হাজার ৮৯৯টি বই এসেছে।
অন্যদিকে মাধ্যমিকে প্রায় ২০ লাখ বই এসেছে। যার শতভাগ বিতরণ করা হয়েছে।
খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা রমেন রায় জানান, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন বই আসছে। বই আসার এবং বিতরণের তালিকা ধারাবাহিকভাবে হালনাগাদ করা হচ্ছে। বই আসা মাত্র আমরা তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিতরণের চেষ্টা করছি।
৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আলফাজ গণির বাবা ওসমান গণি বলেন, প্রতি বছর সময়মতো বই হাতে পাওয়া যায়। এ বছর একটু বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। তবে মূল বই বাংলা, গণিত এবং ইংরেজি হাতে পাওয়ায় ভালো হয়েছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, অনলাইন থেকে বই ডাউনলোড করে প্রিন্ট দিতে গেলে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা গুনতে হবে। পরবর্তীতে বই হাতে পেলে এই প্রিন্ট করা বইয়ের কোনো প্রয়োজন পড়বে না। তাই একটু অপেক্ষা করছি।
খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, এরইমধ্যে আমরা প্রায় সব বই পেয়েছি। শুধুমাত্র চতুর্থ আর পঞ্চম শ্রেণির বই আসতে বাকি আছে। আমাদের আশপাশের জেলায় এসেছে। আশা করি খুলনা জেলায় খুব শিগগিরই বই আসবে।
তিনি আরও বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে বই পৌঁছায়নি সেখানে শিক্ষকদের অনলাইন থেকে বই ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয়টুকু পড়াতে বলা হয়েছে। তবে এ মাসের ভেতর প্রাথমিকের সব বই চলে আসবে বলে তিনি জানান।
খুলনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ শামছুল হক বলেন, বই যেগুলো পাওয়া গেছে তার শতভাগ বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের পুরো চাহিদার বই পেতে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অথবা পুরো মাস সময় লেগে যেতে পারে।
এফএ/জেআইএম