সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার ও চীনের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টন ইউরিয়া সার এবং ৩০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড রয়েছে।
Advertisement
এই সার কিনতে ৭৫৬ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা।
জানা গেছে, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি সভার অনুমোদনের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৩ লাখ ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
Advertisement
এই চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার সর্বমোট ১ কোটি ৮ লাখ ২৪ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে আমদানির প্রত্যাশামূলক অনুমোদনের প্রস্তাব দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আর এক প্রস্তাবে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন চাওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা।
জানা গেছে, গত বছরের ১১ জুন অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই চুক্তি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে ১৫তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৬০.৮৩ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট ১ কোটি ৮ লাখ ২৪ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে আমদানির প্রত্যাশামূলক অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
Advertisement
বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ ১৭ হাজার ৮০০ টাকায় আমদানির আর একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। এ প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১১ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার অনুমোদনের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
কাতার এনার্জি মার্কেটিং’র সাথে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৩৭৮.৮৩ মার্কিন ডলার হিসেবে ৯ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১ কোটি ১৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ ১৭ হাজার ৮০০ টাকা।
বৈঠকে দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের আর একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। এটিও অনুমোদন দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এই সার কিনতে মোট ব্যয় হবে ১২৯ কোটি ৪৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিকল্পনা মোতাবেক কাফকো, বাংলাদেশ হতে ৫ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের সংশোধিত চুক্তি সই হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য প্রাইস অফার পাঠানো অনুরোধ করা হলে কাফকো, বাংলাদেশ প্রাইস অফার প্রেরণ করে।
কাফকোর সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৩.৭৫ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট ১ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২৯ কোটি ৪৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এদিকে বৈঠকে চট্টগ্রামের টিএসপিসিএলের জন্য আরব আমিরাতের মেসার্স মেসার্স জেনট্রেড এফজেডইর কাছ থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জানা গেছে, টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক অ্যাসিড ও রক ফসেফট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি দরপত্র জমা পড়ে। ৩টি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি’র সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেনট্রেড এফজেডই’র কাছ থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড মোট ৭৫ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আর এক প্রস্তাবে চট্টগ্রামের ডিএপিএফসিএলের জন্য ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড চীনের মেসার্স গুয়াংজি পেঙ্গুয়ে ইকো-টেকনোলজি কোং লিমিটেড থেকে ১৪৯ কোটি ৮৮ হাজার টাকায় আমদানির অনুমোদন চাওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে।
জানা গেছে, ডিএপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক অ্যাসিড বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র একটি দরপত্র জমা পড়ে। প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি’র সুপারিশে রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই, ইউএই (প্রস্তুতকারক: মেসার্স গুয়াংজি পেঙ্গুয়ে ইকো-টেকনোলজি কোং লিমিটেড, চীন) থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড মোট ১৪৯ কোটি ৮৮ হাজার টাকায় ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়।
এমএএস/এমএএইচ/