আইন-আদালত

২৫০০ গায়েবি মামলা চিহ্নিত, সাতদিনের মধ্যে প্রত্যাহার

দেশের ২৫ জেলায় আওয়ামী লীগের আমলে আড়াই হাজারের বেশি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা বা গায়েবি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

Advertisement

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আড়াই হাজারের বেশি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা বা গায়েবি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।‌

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গত ১৫ বছর বহু গায়েবি মামলা হয়েছে। আমিও এ ব্যাপারে লেখালেখি করতাম। মানুষ প্রায় প্রশ্ন করছে আমি এটা নিয়ে এখন কী করছি। এ উদ্যোগ (গায়েবি মামলা প্রত্যাহার) দিতে দেরি হয়েছে, কারণ গত সরকারের সময় যে চার-সাড়ে চার হাজার পাবলিক প্রসিকিউটর ছিল, তারা গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ের পর পালিয়ে গেছেন। ৫০-৬০ জন বাদে আর কেউ ছিলেন না। তাই পাবলিক প্রসিকিউটর না থাকলে তো আমরা মামলা প্রত্যাহার করতে পারি না। পাবলিক প্রসিকিউটরদের মাধ্যমে সরকার বা আইন মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে হয়।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা গায়েবি মামলাগুলো চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করি। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা এরই মধ্যে দেশের ২৫ জেলায় আড়াই হাজারের বেশি মামলাকে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বা গায়েবি মামলা হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছি। আড়াই হাজারের বাইরে আরও অনেক থাকতে পারে।’

আগামী সাতদিনের মধ্যে মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ আড়াই হাজারেরও বেশি মামলায় লাখ লাখ আসামি আছে। আরও অনেক জেলাতে আরও অনেক মামলা আছে। ২৫ জেলায় আরও মামলার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।

প্রশ্ন আসতে পারে গায়েবি মামলা বলতে আমরা কি বুঝি। এজন্য এ মামলা চিহ্নিত করার জন্য আমরা চারটি ক্রাইটেরিয়া বাছাই করেছি। প্রথমত এ মামলাগুলো পুলিশ দায়ের করেছে কি না। এ মামলাগুলোতে একটা কমন ট্রেন্ড ছিল- বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের, পুলিশের ওপর আক্রমণ এবং স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে মামলা করা। তৃতীয় প্রবণতা হলো, এখানে অনেক আসামি থাকে আরও বেশি অজ্ঞাতনামা আসামি থাকে। চিহ্নিত করার যে চতুর্থ প্রক্রিয়াটি আমরা অনুসরণ করেছি সেটি হলো, মামলাগুলো সাধারণত করা হতো বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর বড় বড় আন্দোলনের আগে-পরে বা তিনটি ভুয়া নির্বাচনের আগে-পরে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আশা করছি যত গায়েবি মামলা আছে, যেগুলো আমরা চিহ্নিত করতে পারবো, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রত্যাহার করার কাজ হয়ে যাবে।’

Advertisement

আরএমএম/এমএএইচ/এমএস